নিজস্ব প্রতিবেদক
সোনাগাজীতে প্রবাসী বন্ধুর স্ত্রীর আপত্তিকর ছবি ও ভিডিও ধারণ করে ইন্টারনেটে ছেড়ে দেওয়ার ভয় দেখিয়ে একাধিকবার ধর্ষণের অভিযোগ উঠেছে। গত ৪ ফেব্রুয়ারি ভুক্তভোগী প্রবাসীর স্ত্রী বাদী হয়ে সোনাগাজী মডেল থানায় ৩ জনের নাম উল্লেখ করে মামলা দায়ের করেন।
আসামিরা হলেন, উপজেলার ৫ নং চরদরবেশ ইউনিয়নের চরসাহাভিকারী মিয়াজি বাড়ীর রফিকুল ইসলামের ছেলে হারুনুর রশিদ মিয়াজী (৩০), তার বড় ভাই মো. আব্দুল্লাহ আল রোমেল (৩৫) ও একই গ্রামের ইসমাইল মোবারক হোসেনের ছেলে জাকির হোসেন সুভ্র (৩২)।
জানা যায়, ভুক্তভোগী তার খালাতো ভাই প্রবাসী নুর নবী সাগরের সাথে ২০১৮ সালের জানুয়ারিতে বিয়ে হয়। বিয়ের কিছুদিন পর ভুক্তভোগীর স্বামী সাগর ইরাক চলে যান। তাদের একটি কন্যাসন্তানও রয়েছে।
স্ত্রীর ব্যাংক একাউন্ট না থাকায় মা- বাবার চিকিৎসা ও তার পরিবারের জন্য বন্ধু হারুন মিয়াজীর একাউন্টে প্রতিমাসে টাকা পাঠাতেন সাগর। হারুন সেই টাকা নিয়ে সময়-অসময়ে সাগরের বাড়িতে আসতেন। এমন যাতায়াতের কারণে সাগরের বাড়ির সবার সাথে ভালো সম্পর্ক গড়ে তুলেন হারুন।
সাগরের বাড়িতে সিসিটিভি ক্যামেরা ও ইন্টারনেট সংযোগ লাগানোর কথা বলে বাড়িতে যায় হারুন ও তার আরেক বন্ধু নুসাইপা গিফট কর্ণার এন্ড স্টুডিওর পরিচালক জাকির হোসেন সুভ্র।
সম্প্রতি সাগরের স্ত্রী তার বাচ্চাকে নিয়ে ঘুমিয়ে পড়লে তার অজান্তেই সাগরের স্ত্রীর অর্ধনগ্ন ছবি-ভিডিও ধারণ করে ব্লাক-মেইলিং শুরু করেন হারুন।
সাগরের স্ত্রীকে ভয়ভীতি দেখিয়ে প্রথম ধাপে ৫০ হাজার টাকা নেয়। ভিডিও দেখিয়ে ব্ল্যাক’মেই’ল করে একাধিকবার ধর্ষণ করেন। তাকে ভিডিও এডিটিংসহ নানানভাবে সহযোগীতা করেন মোবাইল মেকানিক শুভ্র।
হারুন আপত্তিকর ভিডিও দেখিয়ে তা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে দেওয়ার কথা বলে জমি ক্রয়ের জন্য পাঠানো ৩০ লাখ টাকা, ২০ লাখ টাকা মূল্যের স্বর্ণালংকার হাতিয়ে নেয়।
হারুন প্রবাসে যাওয়ার সময় তার কাছে থাকা ভিডিও তার বন্ধু শুভ্রর কাছে দেয়। শুভ্রও সুযোগটিও কাজে লাগায়।
ভুক্তভোগীর স্বামী নুর নবী সাগর জানান, আমার বন্ধু হয়ে আমার প্রবাসে অর্জিত সমস্ত টাকা আত্মসাৎ করে তারা আমার স্ত্রীকে ব্লাক-মেইল করে আমার ছোট মেয়েকে মেরে ফেলার হুমকি ধামকি দেয়। ব্রাক ব্যাংক থেকে তার ভাই নুরুল আলমের নামে ৬ লাখ টাকা ঋণ নেয়, বাড়ির খালেদা আক্তার নামে একজন থেকে সুদের উপর ৩ লাখ টাকা নেয়।
এভাবে তারা দুইজনেই আমার প্রায় ৬০ লাখ টাকারও বেশি টাকা হাতিয়ে নিয়ে আমাকে সর্বশান্ত করে দিয়ে পথের ভিখারি বানিয়েছে।
সোনাগাজী মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা বায়েজিদ আকন্দ জানান, এ ঘটনায় ওই নারী বাদী হয়ে মামলা করেছেন। আসামিগণ পলাতক আছে। তাদের গ্রেপ্তারে অভিযান চলছে।