আদালত প্রতিবেদকঃ
বিএনপির অঙ্গসংগঠন জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরাম ঘোষিত কর্মসূচি অনুযায়ী আজ তৃতীয় দিনেও সংগঠনটির নেতা কর্মীরা অবস্থান নিয়ে জেলা ও দায়রা জজ আদালত চত্বরে সমাবেশ করেছে। তবে দেরীতে কর্মসূচি শুরুর হলেও মাত্র কয়েক মিনিট পরই চেয়ার গুটিয়ে আন্দোলনকারী বিএনপিপন্থী আইনজীবীরা আদালতে বিভিন্ন মামলার তদ্বিরে ব্যস্ত হয়ে পড়তে দেখা গেছে।
প্রত্যক্ষদর্শীর বরাতে জানা যায় কর্মসূচি ঘিরে কারোরই তেমন কোন আগ্রহ না থাকায় একে সকলে নির্দিষ্ট স্থান ত্যাগ করেন। একাধিক এজলাস
পরিদর্শন করে এর স্বপক্ষে সত্যতা মিলেছে। শুনানীতে অংশগ্রহণ এবং আদালতের বারান্দায় থাকা আন্দোলনকারী দলের নেতাকর্মীরা কেউই প্রকাশ্যে মুখ না খুললেও গাউন পরিধান করে শুনানীতে অংশ নিয়েছেন। এক্ষেত্রে অনেক আইনজীবী কৌশলের অংশ হিসেবে তদ্বিরে স্বাক্ষর করেননি বলে এই প্রতিবেদককে জানিয়েছেন। সরেজমিনে আদালতসমূহের এজলাস ঘুরে এই প্রতিবেদকও একই চিত্র দেখতে পান। জি আর ৬৫৮/২৩ মামলায় রিমান্ড শুনানীতে অংশ নেন রেজাউল করীম তুহিন। অন্য একটি মামলায় হুমায়ুন কবীর বাদলকেও অংশ নিতে দেখা গেছে। জি আর ৬০০/২৩ মামলায় মাইনউদ্দিন রাজু অংশ নেন। এ সময় জামাতপন্থী বলে পরিচিত আইনজীবী মোহাম্মদ জামাল উদ্দিন আদালত বর্জন করেননি বলে এই প্রতিবেদককে জানিয়েছেন।
এছাড়াও পরবর্তী নির্বাচনে বিএনপি সমর্থিত জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরামের সাধারণ সম্পাদক পদপ্রার্থী টিপু সোলায়মানকে আন্দোলনে কারো উপস্থিতি নেই কেন জিজ্ঞেস করা হলে তিনি কিছু বলতে অপারগতা প্রকাশ করেন। তারপর দেখা যায় একেবারে ভিন্ন চিত্র কিছু চেয়ারে বসে আছেন কয়েকজন আইনজীবী। সেখানে উপস্থিত এড. মাহফুজুল হক বলেন বিএনপির আন্দোলন স্থানে আমরা আড্ডা দিচ্ছি রোদ পোহাচ্ছি। আপনার মত করে আমরাও দেখতে পাচ্ছি তারা(আন্দোলনকারীরা) এখানে নেই। তারা শুনানীতে ব্যস্ত। এসময় বারের সিনিয়র সদস্য এড. গিয়াসউদ্দিন নান্নুকে হাসতে দেখা গেছে। সাথে থাকা বিএনপিপন্থী বর্তমানে নিষ্ক্রিয় এড. আব্দুল মালেককেও হাসতে দেখা যায়। এর বাইরে সকল চেয়ারই বিচারপ্রার্থী জনগণ দখলে নিয়ে খোশগল্প করতে দেখা গেছে।
এ প্রসঙ্গে জেলা আইনজীবী সমিতির সিনিয়র সদস্য সাবেক সভাপতি ও জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক এড. নুর হোসেন বলেন বিএনপির সকল আইনজীবীই শুনানীতে অংশ নিয়েছেন। কোন না কোন আদালতে তাদের উপস্থিতি আছে। নাম জিজ্ঞাসা করা হলে তিনিও বিএনপিপন্থী আইনজীবীদের নাম প্রকাশে অপারগতা প্রকাশ করেন।
বিচ্ছিন্নভাবে উক্ত সংগঠনপন্থী এড. নিজামুল আলম বলেন- আমরা আগে ফি নিব তারপর আন্দোলনে অংশ নেব। তারপর শুনানি করবো। তারপর আবার আন্দোলন করবো। বলেও মজা করেন। অনেকটা একই ভাষ্যে এড. মাহমুদুল হাসান বলেন- বর্জন করে কোন কিছু অর্জন করা যায় না। আগে অর্জন করে(ফি নিয়ে) নেই। তারপর আন্দোলনে যাব।
এ সময় উপস্থিত অনেক আইনজীবী হাসি দিয়ে তার কথায় সমর্থন জানান। তিনি একটি ফাইল হাতে গাউন পরিহিত অবস্থায় শুনানীতে অংশ নিতে যাবার সময় এসব কথা বলেন।
পর্যায়ক্রমে আন্দোলনের গতিশীলতা কমে এখন আদালত চত্বরে স্বাভাবিক কার্যক্রম চলমান রয়েছে।