১১ই ফেব্রুয়ারি, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ | ২৮শে মাঘ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ |
  • প্রচ্ছদ
  • টপ নিউজ >> দেশজুড়ে >> ফুলগাজী
  • ফুলগাজী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ২০ বছর ধরে বিকল এক্স-রে মেশিন
  • ফুলগাজী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ২০ বছর ধরে বিকল এক্স-রে মেশিন

    দৈনিক আমার ফেনী

    জামাল উদ্দিন সজীব
    ফুলগাজী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের এক্স-রে মেশিন গত ২০ বছর ধরে বিকল। বঞ্চিত সাধারণ রোগী ও সেবাপ্রত্যাশীরা।
    ফুলগাজী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ১৯৯৭ সালে ৩১ শয্য বিশিষ্ট হাসপাতাল হিসেবে স্থাপন করা হয়। সেই থেকে ফুলগাজীর সাধারণ জনগণ এই হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য আসে। গ্রামগঞ্জের গরিব অসহায়দের একমাত্র চিকিৎসালয় হিসেবে পরিচিত এ হাসপাতাল। হাসপাতালের বয়স ২৭ বছর হলেও ২০ বছর যাবত বিকল এক্স-রে করার যন্ত্র। গ্রামের অসহায় মানুষ নিরুপায় হয়ে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের দারস্থ হয়। কিন্তু শারীরিক পরীক্ষার জন্য হাসপাতালে তাদের সেই সৌভাগ্য হয় না। টাকা খরচ করে বাইরে এ পরীক্ষা করতে হয় যা অসহায় মানুষদের জন্য একটি কষ্টের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। হাসপাতালে যদি এক্স-রে করতে পারতো তাহলে তাদের অনেক উপকার হতো। যন্ত্র নষ্ট থাকার কারণে এ দূর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে বলে জানান হাসপাতালের আগত রোগীরা।
    হাসপাতালে আগত রোগীদের সাথে কথা বলে জানা যায়, বর্তমানে ফুলগাজী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে কাঙ্খিত সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে তারা। এ বিষয়ে অনুসন্ধানে গিয়ে দেখা যায়, হাসপাতালে চারটি মেডিকেল অফিসার পদের মধ্যে উপস্থিত আছে মাত্র দুইজন। তিনজন কনসালটেন্ট পদের একজনও নেই, সবপদই খালি। এ হাসপাতালে কোন ধরনের কনসালটেন্ট নাই যার কারণে আগত রোগীরা তাদের প্রাপ্ত সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। গাইনি বিভাগে, সার্জারি এবং মেডিসিন কনসালটেন্ট না থাকার করণে অনেক রোগী সেবা পাচ্ছে না। বর্তমানে মাত্র দুইজন মেডিকেল অফিসার দিয়ে চলছে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের সেবা। এ উপজেলায় এক লাখ ২৫ হাজার জনগণের জন্য একটি মাত্র সরকারি স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স রয়েছে। প্রতিদিন ওই হাসপাতালে আন্ত:বিভাগ ও বহি:বিভাগে শত শত রোগী চিকিৎসা নিতে আসছে। কিন্তু আগত রোগীরা ঠিকমতো চিকিৎসা পাচ্ছে না বলে জানা যায়।
    হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে আসা মো. এসহাক (৪৫) নামে এক ব্যক্তির কাছে জানতে চাইলে তিনি জানান, দীর্ঘদিন যাবৎ কাশি নিয়ে কষ্ট পাচ্ছে। ডাক্তার বলছে এক্স-রে করানোর জন্য। কিন্তু তাঁর কাছে এক্স-রে করানোর মত টাকা নাই। তিনি জানান যদি হাসপাতালে মেশিনটা চালু থাকতো তাহলে এলাকার নি¤œ আয়ের গরিব অসহায় মানুষদের জন্য অনেক উপকার হতো। দেশে এত বড় বড় আধুনিক হাসপাতাল করে কি লাভ যদি প্রান্তিক পর্যায়ে গ্রাম পর্যায়ে একটা এক্স-রে মেশিন না দিতে পারে। একপর্যায়ে তিনি ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, অটো রিক্সা চালিয়ে কত টাকাই বা পাই, বাইরে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করতে গেলে অনেক টাকা লাগে। যেহেতু প্রাইভেট হাসপাতাল চিকিৎসা না নিয়েই চলে যেতে হবে বলে জানান তিনি।
    নাইরিন সুলতানা নামে এক মহিলা জানান, তাঁর ছেলেমেয়েদের নিয়ে ডাক্তার দেখানোর জন্য আসছে সকাল দশটার সময়। দীর্ঘ লাইনে দাঁড়িয়ে থাকার পরও ডাক্তার আসছে না। কারণ ডাক্তার হাসপাতালে আছে মাত্র দুইজন, তাদের একজনে বহি:বিভাগে রোগী দেখছেন। অপরজন হাসপাতালে আন্ত:বিভাগে ভর্তি রোগী দেখছেন। ফলে যথাসময়ে রোগীরা চিকিৎসা পাচ্ছে না। লাইনে দাঁড়িয়ে থেকে অনেক কষ্ট সহ্য করতে হচ্ছে, না পারছে ফেনীতে প্রাইভেট ডাক্তার দেখাতে না পারছে দীর্ঘ সময় লাইনে দাঁড়িয়ে থাকতে। তারপরও দীর্ঘ সময় অপেক্ষা করে অনেকটা অসহায়ের মতো দাঁড়িয়ে আছে রোগীরা। সেবার মান বলতে কিছুই নেই। যেখানে ডাক্তারে নাই সেখানে সেবা কিভাবে সেবা দিবে?
    হাসপাতালের কর্মরত মেজবাহ উদ্দিন নামে একজন কর্মচারী জানান, সে ২০০৭ সালে এই উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স এ যোগদান করেন। সেই দিন থেকে তিনি দেখছেন ফুলগাজী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে থাকা এক্স-রে মেশিনটি নষ্ট। আনুমানিকভাবে হিসেব করলে দেখা যায় প্রায় ২০ বছর ধরে এ মেশিনটি নষ্ট হয়ে আছে। এটা ঠিক করা হচ্ছে না, বা নতুন কোন মেশিন আনা হচ্ছে না। যার কারণে প্রতিদিন হাসপাতালে আগত গরীব-অসহায় রোগীদের বকাবকি শুনতে হয় হাসপাতালে থাকা কর্মকর্তা-কর্মচারীদের।
    এ প্রসঙ্গে ফুলগাজী উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. মো. গোলাম কিবরিয়া জানান, তিনি গত মাসে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে যোগ দিয়েছেন। দীর্ঘ সময় ধরে এক্স-রে মেশিন নষ্ট হওয়ার কথা তিনি শুনেছেন। এনিয়ে বিগত সময়ে মন্ত্রণালয়ে লেখালেখিও করেছেন অনেকবার। কিন্তু এক্সরে মেশিন রিপেয়ার করা হয়নি। আমিও চেষ্টা করব দ্রুত যাতে নতুন একটি এক্স-রে মেশিন স্থাপন করা হয়। তিনি বলেন, নতুন ভবন চালু হলে এ সংকট কেটে যাবে। তিনি বলেন, উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ হাসপাতালে চাহিদা অনুযায়ী কনসালটেন্ট ও মেডিকেল অফিসার নিয়োগ দেওয়া হলে এ সংকট কেটে যাবে। বর্তমানে গাইনি বিভাগে কনসালটেন্ট’র স্থলে মেডিকেল অফিসার দিয়ে কার্যক্রম চলছে বলে জানান তিনি।

    আরও পড়ুন

    জনসভাকে কেন্দ্র করে জেলা বিএনপির প্রস্তুতি সভা
    ফাজিলপুরে যুবদলের কমিটিকে স্বাগত জানিয়ে আনন্দ মিছিল
    চাঁদাবাজির অভিযোগে জামায়াতের জাকির বহিষ্কার
    ভিডিও ফাঁসের ভয় দেখিয়ে ৬০ লাখ টাকা চাঁদাবাজি
    ক্রীড়া সংস্থার কমিটি বাতিলের দাবিতে লিফলেট বিতরণ
    স্কাউটস’র সহ-সভাপতি সাংবাদিক রহীম
    হাইওয়ে পুলিশ ব্যাডমিন্টন টুর্নামেন্টের উদ্বোধন
    রোগীদের অযথা হয়রানি বন্ধে যত্নবান হউন -জেলা প্রশাসক