১০ই ডিসেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ২৫শে অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ |
  • প্রচ্ছদ
  • টপ নিউজ >> দেশজুড়ে >> ফেনী >> ফেনী শহর
  • ফেনী পৌরসভার নির্বাহী কর্মকর্তার বিরুদ্ধে নানা অনিয়মের অভিযোগ!
  • ফেনী পৌরসভার নির্বাহী কর্মকর্তার বিরুদ্ধে নানা অনিয়মের অভিযোগ!

    দৈনিক আমার ফেনী

    নিজস্ব প্রতিবেদক
    ফেনী পৌরসভার নির্বাহী কর্মকর্তা আবুজর গিফরীর বিরুদ্ধে বিভিন্ন অনিয়মের অভিযোগ পাওয়া গেছে। রাষ্ট্রীয় ক্ষমতায় যখন যে সরকার আসেন তিনি তখন নিজেকে সে সরকারের লোক বলে দাবী করেন। আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে তিনি নানান অনিয়ম, দুনীর্তি ও অপকর্মে যুক্ত ছিলেন বলে অভিযোগ রয়েছে।
    জানাগেছে, পৌরসভার করজারভেন্সী পরির্দশক ছরওয়ার জাহানের সাথে যোগসাজোশে প্রতি মাসে তিনি অতিরিক্ত সুইপার দেখিয়ে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়েছে। এই অনিয়ম ও দুনীর্তির কারণে তখনকার পৌর মেয়র স্বপন মিয়াজী ছরওয়ারকে বরখাস্ত করেন। পরবর্তীতে সৈয়দ আবুজর গিফরী মেয়র স্বপন মিয়াজীকে নানা ভুল বার্তা দিয়ে ছরওয়ারের বরখাস্তের আদেশ প্রত্যাহার করিয়ে নেন। ফেনী পৌরসভার কর আদায়কারী নুরুল হুদা ও টিকাদানকারী পিংকু নাথ এক ব্যক্তির জন্ম নিবন্ধন সনদ করে দেওয়ার কথা বলে ত্রিশ হাজার টাকা নেয়ার অভিযোগ রয়েছে। জানাগেছে, তারা একজনের জাতীয় পরিচয়পত্র ও অপর ব্যক্তির পৌরসভার হোল্ডিং ব্যবহার করে ওই লোককে জন্ম নিবন্ধন করে দেন। ৩০ হাজার টাকা নেয়ার পরও আরো টাকা দাবী করলে সুবিধাভোগী ব্যক্তি পৌরসভার মেডিকেল অফিসার কৃষ্ণপদ সাহাকে বিষয়টি জানান। কৃষ্ণপদ সাহা তাৎক্ষনিক তৎকালীন পৌর মেয়র স্বপন মিয়াজীকে বিষয়টি অবহিত করেন। স্বপন মিয়াজী নুরুল হুদা ও পিংকু নাথের বিষয়ে তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য পৌর নির্বাহী কর্মকর্তা আবুজর গিফরীকে নির্দেশ দেন। নির্দেশ মোতাবেক আবুজর গিফরী নুরুল হুদা ও পিংকু নাথকে কারণ দর্শানোর নোটিশ প্রদান করেন। কারণ দর্শানোর উত্তর যথপোযুক্ত না হওয়ায় তাদের বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় তাদের দুই জনকে গত চলতি বছরের ২৮ ফেব্রুয়ারি সাময়িকভাবে বরখাস্ত করেন। দীর্ঘদিন নুরুল হুদা ও পিংকু নাথ ফেনী পৌরসভার পৌর নির্বাহী কর্মকর্তা আবুজর গিফরীর মাধ্যমে নানান তদবির ও মোটা অংকের টাকা দিয়ে গত ৭ জুলাই তাদের বরখাস্তের আদেশ প্রত্যাহার করে নেন বলে জানাগেছে। বরখাস্তকালীন তাদের প্রাপ্য বকেয়া বেতন-ভাতাদি পরিশোধ করার জন্য অফিস আদেশ জারী করেন। ইতোমধ্যে এই অনিয়ম ও দুর্নীতির কথা স্থানীয় পত্রিকায় ফলাও ভাবে প্রকাশিত হয়। একই অভিযোগে অভিযুক্ত ফেনী পৌরসভার অফিস পিয়ন মো. নুরুন নবীকে গত ২ বছর পূর্বে মেয়র ফেনী পৌরসভা বরখাস্ত করেন। নুরুন নবী এতোদিন পর্যন্ত ঘুরাঘুরি করার পরও তার বরখাস্তের আদেশ প্রত্যাহার করা হয়নি। মেয়র স্বপন মিয়াজী বার বার পৌর নির্বাহী কর্মকর্তাকে নুরুন নবীর বরখাস্তের আদেশ প্রত্যাহারের পত্রটি আনার জন্য বললে পৌরসভার প্রশাসনিক কর্মকর্তা ও পৌর নির্বাহী কর্মকতা চিঠিটি প্রস্তুত করার ক্ষেত্রে ঘড়িমশি তৈরি করেন। নুরুন নবী গরীব কর্মচারী হওয়ায় এবং টাকা কোন টাকা পয়সা দিতে না পারায় দীর্ঘদিন পর্যন্ত তার মাথার উপর এই শাস্তি পড়ে থাকে।
    ০৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার গণঅভ্যত্থানে ফেনী পৌরসভায় প্রশাসক নিয়োগ করলে নুরুন নবী তাঁর দারস্থ হয়। প্রশাসক বিষয়টি অনুধাবন করে নুরুন নবীর বরখাস্তের আদেশ প্রত্যাহারের পত্রটি পৌর নির্বাহী কর্মকর্তা ও প্রশাসনিক কর্মকর্তা শরাফত উল্যাহকে নিয়ে আসতে বললে তারা তার (নুরুন নবী’র) বিষয়ে নানান ভুল বুঝিয়ে কালক্ষেপণ করেন। পরবর্তীতে তার বরখাস্তের আদেশ প্রত্যহারে বিভিন্ন শর্ত জুড়ে একটি দাপ্তরিক আদেশ ফেনী পৌরসভার প্রশাসক গোলাম মোহাম্মদ বাতেন’র নিকট উপস্থাপন করেন এবং উক্ত বরখাস্তের আদেশে স্বাক্ষর করেন।
    নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক পৌরসভার কয়েকজন কর্মকর্তা ও কর্মচারী বলেন, একই অপরাধে অভিযুক্ত নুরুল হুদা ও পিংকু নাথের বরখাস্তের আদেশ প্রত্যাহারে তাদের বকেয়া ভাতা প্রাপ্য হবেন বলে উল্লেখ করা হয়, সেখানে গরীব কর্মচারী নুরুন নবীর ক্ষেত্রে বকেয়া বেতন-ভাতা প্রাপ্য হবেন না ও মূল বেতন থেকে একটি বাৎসরিক ইনক্রিমেন্ট কর্তন করা হবে বলে তার নিকট প্রেরিত পত্রে উল্লেখ করেন।
    এদিকে ফেনী পৌরসভায় বর্তমান প্রশাসক দায়িত্বভার গ্রহণের পর কনজারভেন্সী খাতে বিভিন্ন অনিয়ম ও দুর্নীতি তার গোচরীভূত হওয়ায় তিনি পৌরসভার সুইপারদের নগদ টাকার পরিবর্তে বেতন ভাতা-ব্যাংকের মাধ্যমে পরিশোধ হবে বলে সিদ্ধান্ত দেন। সে সিদ্ধান্ত মোতাবেক তারা ব্যাংকে হিসাব খোলেন ও তাদের বেতন-ভাতা তারা নিজেরাই গিয়ে ব্যাংক থেকে উত্তোলন করতে পারেন। জানাগেছে এর আগে দৈনিক সুইপারদের মজুরি থেকে প্রতিমাসে সৈয়দ আবুজর গিফরী ভুয়া নাম দেখিয়ে কনজারভেন্সী পরিদর্শক ছরওয়ারের মাধ্যমে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নিত। আবুজর গিফরী’র এহেন স্বেচ্ছারিতা, অনিয়ম ও দুর্নীতির বিষয়ে ইতোমধ্যে অনেক জাতীয় পত্র-পত্রিকায় ফলাওভাবে প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছে। এহেন দুনীর্তিবাজ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে তদন্ত পূর্বক প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহনের দাবী জানান সচেতন মহল।
    পৌরসভার পৌর নির্বাহী কর্মকর্তা সৈয়দ আবুজর গিফরী’র মুঠোফোনে বারবার কল করা হলেও তিনি রিসিভ করেননি।
    এসব ব্যাপরে ফেনী পৌরসভার প্রশাসক গোলাম মোহাম্মদ বাতেন এর কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, পৌরসভার নির্বাহী কর্মকর্তার বিরুদ্ধে পত্রিকায় প্রকাশিত বিভিন্ন অভিযোগ দেখেছি। কেউ যদি লিখিত অভিযোগ করে তাহলে উর্ধতন কর্তৃপক্ষকে অবহতি করা হবে। সুইপারের টাকার ব্যাপারে তিনি বলেন, আমরা যে টাকাটা দিচ্ছি সঠিক লোক সে টাকা পাচ্ছে কিনা তা নিশ্চিত করার জন্য আমরা একাউন্টের মাধ্যমে দিচ্ছি। টাকাটা যে আমরা একটা স্বচ্ছ পক্রিয়ার মাধ্যমে খরচ করেছি তার একটা ডুকুমেন্টস। নুর নবির বিষয়টি আমার সামনে উপস্থাপন করায় আমি পুনরায় তদন্ত করে তাকে দোষী পেয়েছি। বিভিন্ন কারনে তাকে আর্থিক জরিমানা করে আমাদের একটি স্কুলে পাঠিয়েছি। যাতে সে পৌরসভার চত্বরেই না থাকে। নুরুল হুদা ও পিংকু নাথের ব্যাপারে আমার জানা নেই।

    আরও পড়ুন

    চলে গেলেন সাংবাদিক এরশাদ মজুমদার
    নগদ প্রণোদনা চেয়ে বিসিক মালিক সমিতির সংবাদ সম্মেলন
    জাতীয়তাবাদী ওলামাদলের মতবিনিময় সভা
    আজকের তরুণরাই হচ্ছে আগামী দিনের স্টার- জেলা প্রশাসক
    মাতুভূঞায় জামায়াতের কর্মী সম্মেলন
    ফেনীতে বিশ্ব ডায়াবেটিস দিবস পালিত
    ইসলামী আন্দোলনের আমীর গণ বিপ্লবের মহানায়ক ছিলেন: মাও. জাফরী
    কোম্পানীগঞ্জে চাঁদা না পেয়ে ছুরিকাঘাত, আহত-৪