দাগনভূঞা প্রতিনিধি
ফেনীর দাগনভূঞার সিন্দুরপুর ইউনিয়নের দরবেশের হাট ফাজিল ডিগ্রী মাদরাসার অধ্যক্ষ মাওলানা আবুল কালামের বিরুদ্ধে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগ উঠেছে। অভিযোগ রয়েছে তিনি ক্ষমতার অপব্যবহার করে অনিয়ম-দুর্নীতি, স্বজনপ্রীতি-স্বেচ্ছাচারিতার মাধ্যমে এসব অর্থ হাতিয়ে নিয়েছেন।
বিচার চেয়ে প্রতিষ্ঠানটির শিক্ষক-কর্মচারীরা মাদরাসার অডিটরিয়ামে বুধবার সংবাদ সম্মেলন করেছেন। সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য রাখেন প্রতিষ্ঠানের সহকারী অধ্যক্ষ মো. জয়নুল আবেদীন, সহকারি শিক্ষক মো. এমদাদ উল্ল্যাহ, সহকারী শিক্ষক জহিরুল হায়দার। তারা বলেন সিন্দুরপুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি মাস্টার শফিকুর রহমান অত্র প্রতিষ্ঠানের সভাপতির দায়িত্ব পালন করছেন। তার হাত ধরে অধ্যক্ষ আবুল কালাম মাদরাসায় অনিয়ম ও দুর্নীতির আখড়া তৈরি করেন। প্রতিষ্ঠানকে তার নিজস্ব কার্যালয়ে পরিণত করেন। এরপর গত ৫ ই আগস্ট ছাত্র বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনে হাসিনা সরকারের পরাজয় হলে ৬ ই আগষ্ট মাদরাসায় ছাত্র ছাত্রী ও এলাকাবাসীর বিক্ষোভের মধ্যে অত্র মাসরাসার অধ্যক্ষ আবুল কালাম পদত্যাগ করতে বাধ্য হন।
মাদরাসার শিক্ষকরা বলেন, অধ্যক্ষ আবুল কালাম চলতি বছরের শিক্ষক-কর্মচারীদের বেতন বোনাস ও টিএফসহ মোট ১২ লাখ টাকা বকেয়া রাখেন। তার এই সব অনিয়ম ও দুনীতির তিন সদস্য বিশিষ্ট তদন্ত কমিটি গঠন করে। তদন্ত কমিটি গত ১২ সেপ্টেম্বর তাদের রিপোর্ট পেশ করেন। রিপোর্টে অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে সুনিদিষ্ট ১৫ টি অনিয়ম ও দুর্নীতির তথ্য পেয়েছে।

তদন্ত কমিটির এমদাদ উল্ল্যাহ বলেন, অধ্যক্ষ গত ৬ আগষ্ট সরকার পতনের পর মাদরাসার ছাত্র ছাত্রী ও এলাকাবাসীর বিক্ষোভের মধ্যে ব্যক্তিগত কারণ দেখিয়ে পদত্যাগ পত্র জমা দিয়ে কোন হিসাব নিকাশ না দিয়ে মাদরাসা থেকে পলায়ন করেছেন। তিনি আরও বলেন, তার সময় তিন জন শিক্ষক ও চারজন কর্মচারী নিয়োগ তিনি টাকার বিনিময়ে দেন। তদন্ত প্রতিবেদনে গত দুই অর্থ বছরে ১৬ লাখ টাকার অনিয়ম ও ৪০ লাখ টাকার ভুয়া ভাউচার সন্ধান পাওয়া গেছে।
তদন্ত কমিটির সদস্য নুর আহমদ বলেন, অধ্যক্ষের পাশের একটি গোপন কক্ষের সন্ধান পাওয়া যায়। সখানে তিনি অফিস সময় বিশ্রাম নিতেন। তিনি মাদরাসায় আসতেন মাইক্রো নিয়ে। আসার সময় তার বাগান বাড়ির নিজস্ব মাদরাসা থেকে তিন চারজন ছেলে নিয়ে আসতেন। ওই গোপন কক্ষে ছেলেদেরকে দিয়ে শরীর ম্যাসেজ করাতেন। তার উপরের মহলে হাত থাকার কারনে ও মাদরাসার সভাপতি তার অনুকূলে থাকার কারনে তার উপর কেউ কথা বলতে পারতো না। তিনি পলাতক হওয়ার আগে বেতন ভাতার নামে ৮ লাখ টাকা প্রতিষ্ঠানের ব্যাংক একাউন্ট থেকে উত্তোলন করে আত্মসাৎ করেন। সংবাদ সম্মেলনে এ রকম ১৫টি সুনির্দিষ্ট অভিযোগে কয়েক কোটি টাকা আত্মসাৎ ও দুর্ব্যবহারের অভিযোগ আনা হয়েছে।
এ বিষয়ে দরবেশের হাট ফাজিল ডিগ্রি মাদরাসার অধ্যক্ষ আবুল কালাম তার বিরুদ্ধে আনিত অভিযোগগুলো মিথ্যে বলে জানান। তিনি বলেন, আমার থেকে জোর করে পদত্যাগ পত্রে স্বাক্ষর নেয়া হয়েছে।




