আমার ফেনী ডেস্ক
ফেনীতে এবার যে স্মরণকালের ভয়াবহ বন্য হয়েছে তার প্রধান কারণ ‘উড়ন্ত নদী’। উড়ন্ত নদী বা আকাশ নদীর পানি অতিমাত্রায় জমিতে আসার কারণেই এই বন্যা। ভারতসহ অনেক দেশেই উড়ন্ত নদীর কারণেই এমন বৃষ্টিপাত হয়েছে। সিলেটে গত তিন বছরে এমন নদী ১৭ বার আঘাত হেনেছে বলে জানাগেছে।
“আমাজন বা ব্রহ্মপুত্র, যমুনা নদী যে পরিমাণ পানি বহন করে, তার থেকেও বেশি পরিমাণে পানি একটা উড়ন্ত নদীতে থাকতে পারে। অনেক বেশি পরিমাণে জলীয়বাষ্প বহন করার কারণেই এটাকে জলীয় বাষ্পকে নদী বলা হচ্ছে। এটা খুব লম্বা এবং সরু থাকে।”
বিজ্ঞানীরা বলছেন, পৃথিবী দ্রুত উষ্ণ হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে এই বায়ুমণ্ডলীয় নদীগুলো দীর্ঘ, প্রশস্ত ও তীব্রতর হয়ে উঠছে; যা বিশ্বজুড়ে কোটি কোটি মানুষকে বন্যার ঝুঁকিতে ফেলেছে।
উড়ন্ত নদীটা আকাশে তৈরি হয়, সেখানে প্রচুর পরিমাণে জলীয়বাষ্প থাকে। অনেক বেশি পরিমাণে জলীয়বাষ্প বহন করার কারণেই এটাকে নদী বলা হচ্ছে। এই নদী খুব লম্বা এবং সরু থাকে।
বুয়েটের পানি ও বন্যা ব্যবস্থাপনা ইনস্টিটিউটের একদল গবেষক বলছেন, গত ১৮ আগস্ট একটি ‘উড়ন্ত নদীর’ অস্তিত্ব ছিল, যেটি বঙ্গোপসাগর থেকে কক্সবাজার-ত্রিপুরা হয়ে আরও উত্তরদিকে অবস্থান করছিল। অদৃশ্য এ আকাশ নদীর দৈর্ঘ্য ছিল ২ হাজার কিলোমিটারের বেশি, আর প্রস্থ ছিল ৫০০ কিলোমিটার।
বুয়েটের বন্যা ব্যবস্থাপনা ইনস্টিটিউটের গবেষক দলের নেতৃত্ব দিয়েছেন সেখানকার সহযোগী অধ্যাপক শম্পা।
ফ্লাইং রিভার বা উড়ন্ত নদীর ধারণা দিতে গিয়ে বুয়েটের এই শিক্ষক বলছেন, কোথাও ‘উড়ন্ত নদী’ তৈরি হলে এর প্রভাবে একদিনে অতি ভারি বৃষ্টি ঝরে।
সাধারণত ২৪ ঘণ্টায় ৮৮ মিলিমিটারের বেশি বৃষ্টি রেকর্ড হলে তাকে বলা হয়ে থাকে অতি ভারি বৃষ্টিপাত।
“ধরুন কোনো এলাকায় যদি জুন মাসের স্বাভাবিক বৃষ্টিপাত হয় ১০০ মিলিমিটার, বায়ুমণ্ডলে ‘উড়ন্ত নদী’ তৈরি হলে সেখানে একদিনেই ৩০০/৪০০ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়।”
দেশে দেশে এভাবে উড়ন্ত নদীর সৃষ্টি হচ্ছে। বিবিসি বলছে, পৃথিবীর বাতাসে ভাসমান মোট জলীয় বাষ্পের প্রায় ৯০ শতাংশই বহন করে বায়ুমণ্ডলীয় নদী। এই জলীয় বাষ্পের পরিমাণ বিশ্বের বৃহত্তম নদী আমাজনের স্বাভাবিক পানি প্রবাহের প্রায় দ্বিগুণ।