আয়েশা আক্তার,নিজস্ব প্রতিবেদক:
কোটা সংস্কারের আন্দোলন সামনে রেখে দেশব্যাপী সন্ত্রাসী তা-ব ও ধ্বংসাত্মক কার্যক্রমের নিন্দা জানিয়েছে নাগরিক সমাজ। বিচার বিভাগীয় তদন্ত কমিটির মাধ্যমে সামগ্রিক ঘটনা তদন্ত করে কঠোর ব্যবস্থা নেয়ার জন্য সরকারের কাছে দাবি জানিয়েছেন দেশের ১৭৯ জন বিশিষ্ট নাগরিক।
শুক্রবার সাবেক সচিব কে. এইচ. মাসুদ সিদ্দিকী স্বাক্ষররিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এই দাবি জানানো হয়। বিবৃতিতে স্বাক্ষর করেন- বিশিষ্ট অর্থনীতিবিদ ড. কাজী খলীকুজ্জমান আহমদ, অবসরপ্রাপ্ত সচিব বীর প্রতীক মমিন উল্লাহ পাটোয়ারী, জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের সাবেক চেয়ারম্যান কাজী রিয়াজুল হক, চিত্রশিল্পী হাশেম খান, বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গর্ভনর ড. আতিউর রহমান, জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ড. মো. মশিউর রহমান, চিত্রশিল্পী রফিকুন্নবী, সাবেক আইজিপি মোহাম্মদ নুরুল হুদা, সাবেক আইজিপি ড. হাসান মাহমুদ খন্দকার, বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, নাট্যব্যক্তিত্বসহ ১৭৯ জন বিশিষ্ট ব্যক্তি।
বিবৃবিতে বলা হয়, গত ১৬ জুলাই থেকে নাশকতামূলক কার্যকলাপের মাধ্যমে তারা বাংলাদেশ টেলিভিশন ভবন, বাংলাদেশের মানুষের বহু আকাঙ্খিত পদ্মা সেতুর সঙ্গে সংশ্লিষ্ট সেতু ভবন, মেট্রোরেল, বিআরটিএ, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদপ্তর, ডিজিটাল ডাটা সার্ভার স্টেশন, কারাগার, স্বাস্থ্য অধিদপ্তর, নবনির্মিত এক্সপ্রেসওয়েসহ বিভিন্ন জাতীয় গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনায় হামলা ও অগ্নিসংযোগের মাধ্যমে হাজার হাজার কোটি টাকার সম্পদ নষ্ট করেছে। অস্ত্র লুটসহ জঙ্গি-সন্ত্রাসীদের কারাগার থেকে পালিয়ে যাওয়ায় সহায়তা করেছে। জনজীবন বিপন্ন ও দুর্বিসহ করে তুলছে এবং কর্তব্যরত আইন শৃংখলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যদের আক্রমণ ও হত্যার মাধ্যমে নিজেদের স্বরূপ উন্মোচিত করেছে। এই ধরনের দেশ বিরোধী কার্যক্রমের নিন্দা জানান তারা। এ বিষয়ে বাংলাদেশের নাগরিক হয়েও যারা বিদেশি হস্তক্ষেপ আহবান করেছে, তাদের নেতিবাচক ভূমিকার নিন্দা জানান বিশিষ্টজনেরা।
তারা মনে করেন, এই গোষ্ঠি ২০২৩ সালের ২৮ অক্টোবর আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যদের হত্যা, বাংলাদেশের প্রধান বিচারপতির বাসভবন, পুলিশ হাসপাতালসহ বিভিন্ন স্থাপনায় আক্রমণ ও নাশকতা চালিয়েছে। এরই পুনরাবৃত্তি হচ্ছে বর্তমানের এই ধ্বংসাত্মক কার্যক্রম।
কোটা সংস্কারে দেশের সর্বোচ্চ আদালতের রায় অনুযায়ী সরকার প্রজ্ঞাপন জারি করায় সংশ্লিষ্টদের ধন্যবাদ জানানো হয়। তারা বিশ্বাস করেন, এর মাধ্যমে ছাত্রদের মূল দাবি পূরণ হয়েছে। তাই এখন ছাত্রদের পড়ালেখার প্রতি মনোযোগী হওয়ার পরামর্শ দেন দেশের এই বিশিষ্ট নাগরিকেরা।
কোটা আন্দোলনের ওপর ভর করে যে সন্ত্রাসীরা রাষ্ট্রবিরোধী কাজে লিপ্ত হয়ে পুনরায় অগ্নিসন্ত্রাস, রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানগুলোকে ধ্বংসস্তূপে পরিণত করে দেশব্যাপি নৈরাজ্য সৃষ্টি এবং জনজীবন বিপন্ন করেছে, সুষ্ঠু তদন্তের মাধ্যমে তাদেরকে বিচারের মুখোমুখি করার দাবি জানানো হয়। পাশাপাশি এ বিষয়ে গঠিত বিচার বিভাগীয় তদন্ত কমিটির মাধ্যমে সামগ্রিক বিষয়টি তদন্ত করে ব্যবস্থা নেয়ার জন্য সরকারের কাছে আহবান জানান দেশের এই বিশিষ্টজনেরা।