১৩ই জুন, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ | ৩০শে জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ |
শিরোনাম
ফেনীতে ডোবায় মিলল বিএফ শাহীন স্কুল এন্ড কলেজের পঞ্চম শ্রেণির শিক্ষার্থীর মরদেহ নির্বাচনের সময় ঘোষণায় মিশ্রপ্রতিক্রিয়া প্রমাণ করে সরকার নিরপেক্ষ- মজিবুর রহমান মঞ্জু পেশাদার চোর চক্রের দুই সদস্য গ্রেপ্তার প্রগতি ক্রীড়া ও সমাজকল্যাণ সংঘের সভাপতি লোকমান ও সম্পাদক শাহীন অধ্যাদেশের মাধ্যমে বীর মুক্তিযোদ্ধার নতুন সংজ্ঞা কোম্পানীগঞ্জে প্রবাসীর বাড়িতে দুর্ধর্ষ ডাকাতি ফেনী জেলা জাতীয়তাবাদী সাইবার দলের সভাপতি বাবলু ও সম্পাদক পারভেজ ফেনীতে কৃষকদের পার্টনার স্কুল কংগ্রেস -২০২৫ অনুষ্ঠিত বন্ধুর বিশ্বাসঘাতকতায় ছাত্রলীগ নেতা বিমান বন্দরে কট পুলিশ কোয়ার্টারে আদালতের নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে ভবন নির্মাণকাজের অভিযোগ
  • প্রচ্ছদ
  • জাতীয় >> টপ নিউজ >> মতামত
  • এ পোড়ানীতি কোথায় নিয়ে যাবে আমাদের
  • এ পোড়ানীতি কোথায় নিয়ে যাবে আমাদের

    দৈনিক আমার ফেনী

    ধ্রুব হাসান

    রাজধানী ঢাকা ধীরে ধীরে ক্ষত থেকে সেরে উঠছে। এখনও জায়গায় জায়গায় পোড়া গন্ধ, পোড়া গাড়ির চিহ্ন। পরিস্থিতি বিবেচনা করে কারফিউ শিথিলের সময় বাড়ছে। স্বাভাবিক জীবনে তবু ফিরতে পারেনি রাজধানীবাসী। ১৫ জুলাই থেকে শুরু হওয়া সহিংসতা ১৭জুলাই রূপ নেয় ধ্বংসযজ্ঞে। ১৭- ১৮ জুলাই পুরো রাজধানী পুড়িয়ে ফেলা হয়। এ যেনো পোড়ামাটি নীতি। পোড়ামাটি নীতি এমন একটি সামরিক কৌশল যা দ্বারা সেনারা এক জায়গা থেকে অন্য জায়গায় যাওয়ার সময় প্রতিপক্ষের সামরিক বেসামরিক নির্বিশেষে সবাইকে হত্যার পাশাপাশি সবকিছু পুড়িয়ে দেয়। শত্রুর পক্ষে ব্যবহার করা সম্ভব—এমন স্থাপনা ও অবকাঠামো পুড়িয়ে দেয়।

    ছাত্রদের আন্দোলনের একসময় আন্দোলন ভিন্নরূপ ধারণ করে। ছাত্রদের আন্দোলন সরকার পতনের আন্দোলনে নিয়ে যায় বিরোধী দল বিএনপি জামায়াতগোষ্ঠী। সেই ধ্বংসযজ্ঞ মনে করিয়ে দেয় একাত্তরের নৃসংশতাকে। যখন পরাজয় নিশ্চিত তখন পাক হানাদার বাহিনী বাংলাদেশের সূর্যসন্তানদের হত্যা করা ও অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটিয়ে দেশকে পঙ্গু করে দিতে চেয়েছিলো। এবারের ধ্বংসযজ্ঞও সেই পোড়ামাটির নীতিই মনে করিয়ে দেয় বার বার।

    সরকারি চাকরির সকল গ্রেডে নিয়োগে কোটা সংস্কারের দাবিতে লাগাতার কর্মসূচির অংশ হিসেবে জুলাই মাসের শুরুতে আন্দোলন শুরু করে কোটাবিরোধীরা। ১০ জুলাই সরকারি চাকরিতে সরাসরি নিয়োগে (৯ম থেকে ১৩তম গ্রেড) কোটার বিষয়ে পক্ষগুলোকে চার সপ্তাহের জন্য স্থিতাবস্থা বজায় রাখতে নির্দেশ দেন আপিল বিভাগ। কিন্তু দাবি না মানা পর্যন্ত আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দেন কোটাবিরোধীরা।

    এরপর গত ১৬ জুলাই কোটাবিরোধীদের চলমান আন্দোলন সহিংসতায় রূপ নেয়। ওইদিনই সারা দেশে দিনভর চলে ব্যাপক বিক্ষোভ ও সংঘর্ষ। কোটা সংস্কার আন্দোলনের মধ্যে রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন স্থানের সরকারি গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনায় হামলা শুরু হয়। স্থাপনা ভাঙচুরের পাশাপাশি দেওয়া হয় আগুন। পরে ২০ জুলাই দেশজুড়ে কারফিউ জারি করে সেনা মোতায়েন করা হলে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসে। ঘোষণা করা হয় সাধারণ ছুটি।

    কিন্তু এরই মধ্যে রাজধানীর যাত্রাবাড়ী, উত্তরা, বাড্ডা, মিরপুর ও মোহাম্মদপুরে আন্দোলনকারীদের সাথে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ব্যাপক সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। সহিংসতার সময় একের পর এক ভবনকে লক্ষ্য করে তাণ্ডব চালাতে দেখা যায়। এতে আগুনে পুড়েছে বিপুল সংখ্যক গাড়িসহ সরকারি নানা স্থাপনা।

    টানা পাঁচদিন ধরে আন্দোলনকারীদের চলা কর্মসূচিতে নাশকতা থেকে রেহাই পায়নি রাষ্ট্রীয় গুরুত্বপূর্ণ প্রতিষ্ঠানগুলো। রাষ্ট্রীয় টেলিভিশন বিটিভির প্রধান কার্যালয়ে আগুন, মেট্রোরেলের কাজীপাড়া ও মিরপুর-১০ নম্বর স্টেশন, সেতু ভবন, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ভবন, বিআরটিএ ভবনের মত সরকারি স্থাপনায় একের পর এক হামলা, ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করা হয়েছে। এছাড়া যাত্রাবাড়ীতে মেয়র মোহাম্মদ হানিফ ফ্লাইওভারের টোল প্লাজা, এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের বনানী ও মহাখালী টোলপ্লাজা, ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের আঞ্চলিক কার্যালয়সহ বিভিন্ন স্থাপনা, মিরপুর ফায়ার সার্ভিস স্টেশন ও মিরপুরের ইনডোর স্টেডিয়ামেও হামলা করা হয়েছে। ঢাকা মহানগর পুলিশের বিভিন্ন স্থাপনায় ভাঙচুরের পাশাপাশি একাধিক থানা ও পুলিশ ফাঁড়িতে আগুন দেয়া হয়।

    ঢাকা মহানগর পুলিশ সূত্রে জানা যায়, কয়েকদিনের সহিংসতায় ডিএমপির ট্র্যাফিক বিভাগের বিভিন্ন স্থাপনায় আগুন দিয়ে প্রায় সাড়ে চার কোটি টাকার ক্ষতি করা হয়েছে। আগুন দিয়ে পুড়িয়ে দেয়া হয়েছে গুলশানে ট্র্যাফিক উপকমিশনারের অফিস। এছাড়া এসি রমনা, রামপুরা, মহাখালী ও উত্তরা অফিস পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। পুরো ঢাকা শহরে মোট ৫৪টি ট্র্যাফিক পুলিশ বক্স পুড়িয়ে দেয়া হয়।

    যারা দেশের এই বিপুল ক্ষতি ঘটালো তাদের মনে কী ছিলো? রাষ্ট্রের সম্পদ রক্ষা নাগরিকের দায়িত্ব। কোন মানসিকতা থেকে সেই জিনিসগুলো ধ্বংস করা সম্ভব যার সেবা সে নিজে নেয়। কেবল দেশকে ভালো না বাসলেই এইসব ধ্বংসযজ্ঞ করা সম্ভব। আন্দোলনে দাবি থাকবে, তা আদায়ে সহিংসতা হবে কিন্তু তাই বলে পুরো শহরটাকে পুড়িয়ে ফেলার নীতি আমাদের কোথায় নিয়ে দাঁড় করাবে, এই প্রশ্ন কি একবারও এই সন্ত্রাসীদের মনে আসবে। যারা এইসব ধ্বংসযজ্ঞের বিপরীতের সরকারের হস্তক্ষেপে ঘটা হতাহতের ঘটনাকে দাঁড় করাচ্ছেন তারা একবার ভেবে দেখবেন কী- কার বিপরীতের আপনাদের অবস্থান?

    আরও পড়ুন

    ফেনীতে ডোবায় মিলল বিএফ শাহীন স্কুল এন্ড কলেজের পঞ্চম শ্রেণির শিক্ষার্থীর মরদেহ
    নির্বাচনের সময় ঘোষণায় মিশ্রপ্রতিক্রিয়া প্রমাণ করে সরকার নিরপেক্ষ- মজিবুর রহমান মঞ্জু
    পেশাদার চোর চক্রের দুই সদস্য গ্রেপ্তার
    প্রগতি ক্রীড়া ও সমাজকল্যাণ সংঘের সভাপতি লোকমান ও সম্পাদক শাহীন
    অধ্যাদেশের মাধ্যমে বীর মুক্তিযোদ্ধার নতুন সংজ্ঞা
    কোম্পানীগঞ্জে প্রবাসীর বাড়িতে দুর্ধর্ষ ডাকাতি
    ফেনী জেলা জাতীয়তাবাদী সাইবার দলের সভাপতি বাবলু ও সম্পাদক পারভেজ
    ফেনীতে কৃষকদের পার্টনার স্কুল কংগ্রেস -২০২৫ অনুষ্ঠিত