নিজস্ব প্রতিবেদক
কোরবানির ঈদের আগে গড় হিসাবে দেশে প্রতিদিন ১০ কোটি ৩৭ লাখ ডলার রেমিটেন্স আসছে। গেল সাত দিনে প্রবাসীরা ৭২ কোটি ৬৩ লাখ ডলার পাঠিয়েছেন। এর আগে কখনই এক দিনে ১০ কোটি ডলারের বেশি রেমিটেন্স দেশে আসেনি।
এমনিতেই গত কয়েক মাস ধরে অর্থনীতির সবচেয়ে উদ্বেগজনক সূচক বিদেশি মুদ্রার সঞ্চয়ন বা রিজার্ভের অন্যতম প্রধান উৎস রেমিটেন্সের গতি ভালো ছিল; ঈদের আগে তা আরও বেড়েছে।
বাংলাদেশ ব্যাংক রবিবার রেমিটেন্সের সাপ্তাহিক তথ্য বলছে, বিদায়ী ২০২৩-২৪ অর্থবছরের শেষ মাস জুনের প্রথম সাত দিনে ব্যাংকিং চ্যানেলে ৭২ কোটি ৬২ লাখ ৯০ হাজার ডলার পাঠিয়েছেন বিশ্বের বিভিন্ন দেশে অবস্থানকারী প্রবাসীরা। বর্তমান বিনিময় হার (প্রতি ডলার ১১৮ টাকা) হিসাবে টাকার অঙ্কে এই অর্থের পরিমাণ ৮ হাজার ৫৭০ কোটি টাকা। প্রতিদিনের গড় হিসাবে এসেছে ১০ কোটি ৩৮ লাখ ডলার; টাকার অঙ্কে যা ১ হাজার ২২৪ কোটি টাকা। এই হারে এলে মাস শেষে রেমিটেন্সের অঙ্ক ৩১১ কোটি ২৭ লাখ (৩.২৭ বিলিয়ন) ডলারে গিয়ে পৌঁছবে। যা হবে একক মাসের হিসাবে সর্বোচ্চ রেমিটেন্স। এর আগে ২০২০ সালের জুলাই মাসে এ যাবতকালের সবচেয়ে বেশি ২৫৯ কোটি ৮২ লাখ (২.৬ বিলিয়ন) ডলার রেমিটেন্স এসেছিল দেশে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের মুখপাত্র ও নির্বাহী পরিচালক মেজবাউল হক বলেন, “রেমিটেন্সের ইতিবাচক ধারা অব্যাহত ছিল। টাকা-ডলারের বিনিময় হারের নতুন পদ্ধতি ‘ক্রলিং পেগ’ চালুর ফলে ডলারের দাম বেশ খানিকটা বেড়েছে। তার প্রভাব মে মাসের রেমিটেন্সে আমরা দেখতে পেয়েছিল। এখন রেমিটেন্স যেটা বাড়ছে—সেটা মূলত কোরবানির ঈদের কারণে। ঈদকে সামনে রেখে পরিবার-পরিজনের বাড়তি খরচের বিষয়টি বিবেচনায় রেখে বেশি রেমিটেন্স পাঠাচ্ছেন প্রবাসীরা।”
গত ৯ মে থেকে বাংলাদেশ ব্যাংক টাকা-ডলারের বিনিময় হারের নতুন পদ্ধতি ‘ক্রলিং পেগ’ চালু করেছে। এই পদ্ধতিতে এখন থেকে দেশের মধ্যে ডলারের দর লাফ দিতে পারবে না, কেবল হামাগুড়ি দিতে পারবে। আর সেই হামাগুড়ি দিতে হবে নির্দিষ্ট একটি সীমার মধ্যে। সীমার বাইরে যাওয়া যাবে না। আপাতত সেই সীমা হচ্ছে ১১৭ টাকা। এতে এক লাফে ডলারের দর বেড়েছে ৭ টাকা। অর্থাৎ ব্যাংকগুলো এখন ১১৭ থেকে ১১৮ টাকা দরে রেমিটেন্স সংগ্রহ করতে পারবে। এরসঙ্গে যোগ হবে সরকারের দেওয়া আড়াই শতাংশ প্রণোদনা।