নিজস্ব প্রতিবেদক
আগামী মাসের শেষে অথবা জুলাইয়ের শুরুতে দিল্লি সফরে যাওয়ার কথা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার। বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে ওই সফরে অগ্রগতি হওয়ার কথা। সেই সফরের আগে ভারতে নির্বাচনী প্রচারে বাংলাদেশে গণতন্ত্র, ভোটের স্বাধীনতা নিয়ে বিরূপ আলোচনায় বিরক্ত বাংলাদেশ।
সমস্যার মূলে ভারতীয় আম আদমি পার্টির প্রধান অরবিন্দ কেজরিওয়াল। নিজ দেশের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে নিশানা করতে গিয়ে তিনি বারে বারে রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্রাদিমির পুতিন ও বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার তুলনা টানছেন। পাঞ্জাবের নির্বাচনী সভায় বলেন, শেখ হাসিনা দেশের বিরোধীদের জেলে পুরে ভোটে জিতে ক্ষমতা দখল করেছেন। পাকিস্তানে ইমরান খানকেও সে দেশের সেনা নিয়ন্ত্রিত প্রশাসন জেলে আটকে রেখে ভোট করিয়েছে। একই পথে ফের বিপুল সমর্থন নিয়ে জয়লাভ করেছেন ভ্লাদিমির পুতিন। তিনি বিরোধীদের জেলে পুরেছেন অথবা খুন করেছেন।’
দিল্লির সাউথ ব্লকের কূটনৈতিক সূত্র জানিয়েছে, দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী কেজরিওয়াল বাংলাদেশের গণতন্ত্র এবং এ বছরের গোড়ায় অনুষ্ঠিত জাতীয় সংসদ নির্বাচনের মান নিয়ে প্রশ্ন তোলায় ঢাকা অত্যন্ত ক্ষুব্ধ। বাংলাদেশ সরকার মনে করছে, ভারতের বিরোধী দল কথাগুলি বললেও তাতে দু-দেশের সম্পর্কে বিঘ্ন ঘটতে পারে। সে দেশের এক কূটনীতিকের কথায়, কেজরিওয়ালের মনে রাখা উচিৎ ছিল, বাংলাদেশের নির্বাচনকে ভারত সরকার স্বীকৃতি দিয়েছে তাই-ই শুধু নয়, প্রধানমন্ত্রী মোদীই প্রথম ফোনে শেখ হাসিনাকে শুভেচ্ছা জানিয়েছেন।
কেজরিওয়ালের বক্তব্য, বাংলাদেশে বিরোধীদের জেলে পুরে রেখে জয়লাভ করেছেন। ভারতে নরেন্দ্র মোদীও একই পথ নিয়েছেন। এই প্রসঙ্গে তিনি নিজের এবং ঝাড়খণ্ডের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী হেমন্ত সরেনকে জেলে পাঠানোর কথা তুলে ধরেন। ঢাকার বক্তব্য, পড়শি দেশকে নিয়ে দিল্লির মুখ্যমন্ত্রীর বক্তব্য অত্যন্ত অবিবেচনামূলক এবং সত্যের অপলাপ। বিএনপি নেত্রী খালেদা জিয়া-সহ একাধিক নেতা দুর্নীতির মামলায় জেলবন্দি। হাসিনা সরকার মানবিক কারণে সাবেক প্রধানমন্ত্রীকে কারাগারের পরিবর্তে বাড়িতে থাকার অনুমতি দিয়েছে।
সরকারিভাবে বাংলাদেশ সরকার প্রকাশ্যে প্রতিক্রিয়া না দিলেও প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ সহকারী বিপ্লব বড়ুয়া ভারতীয় গণমাধ্যমকে জানান, দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী না জেনেই বাংলাদেশ সম্পর্কে মন্তব্য করছেন। বাংলাদেশে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে শত বাধার মধ্যেও নির্বাচন করা হয়েছে।
সাবেক রাষ্ট্রদূত মুন্সী ফয়েজ আহমেদ বলেন, বিরোধী দল বিএনপি শেষ মূহূর্তে নির্বাচন বয়কট করায় ভোটদানের হার কিছুটা কম হয়েছে।যদিও সরকার এবং নির্বাচন কমিশন দফায় দফায় বিরোধী দলকে ভোটে অংশ নিতে রাজি করাতে উদ্যোগী হয়েছিল। তারা শোনেনি। বিএনপির অংশগ্রহণ ছাড়াও দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন নিরপেক্ষ ও শান্তিপূর্ণভাবে হয়েছে। যদিও সরকার এবং নির্বাচন কমিশন দফায় দফায় বিরোধী দলকে ভোটে অংশ নিতে রাজি করাতে উদ্যোগী হয়েছিল। তারা শোনেনি।