নিজস্ব প্রতিবেদক
উপজেলা পরিষদ প্রথম ধাপের নির্বাচনে দলীয় নির্দেশ অমান্য করে প্রার্থী হওয়া ৭৫ জনকে বহিষ্কার করে বিএনপি। কিন্তু নেতাদের নির্বাচন থেকে সরাতে পারছে না দলটি। দ্বিতীয় ধাপে বিএনপির বিভিন্ন পর্যায়ের অন্তত ৩৩ জন নেতা চেয়ারম্যান পদে নির্বাচন করছেন। এতে বিব্রত বিএনপির শীর্ষ নেতৃত্ব। বিএনপি নেতারাই যখন নির্বাচনে অংশ নিচ্ছেন তখন দলটির ভোটদানে নিরুৎসাহিত করার কর্মসূচি হাস্যকর বলে মন্তব্য করেছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকেরা।
প্রথম ধাপের চেয়ে দ্বিতীয় ধাপের নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে বিএনপির প্রার্থীর সংখ্যা বেশি। প্রথম ধাপে চেয়ারম্যান পদে প্রার্থী হন ২৮ জন। শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত দ্বিতীয় ধাপে ৩৩ জন নেতা চেয়ারম্যান পদে মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছের। একইভাবে ভাইস চেয়ারম্যান ও মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে প্রার্থীর সংখ্যাও অনেক।
নির্বাচন বর্জনে কঠোর নির্দেশ সত্ত্বেও দ্বিতীয় ধাপের নির্বাচন মনোনয়নপত্র দাখিল সংখ্যা বেশি, কারণে তৃণমূলের নেতারা নির্বাচনে অংশ নিতে চান। একাধিক বিএনপির নেতা জানিয়েছেন, উপজেলা নির্বাচন কোনো দলীয় নির্বাচন নয়। ব্যক্তি জনপ্রিয়তা এখন বড় ফ্যাক্টর। বিএনপির বহু নেতা জনপ্রিয়। কিন্তু শীর্ষ নেতারা বুঝতে চায়না। কারণ তারা এমপি-মন্ত্রী হতে পারেননি, তাই তৃণমূলের নেতারাদেরও চেয়ারম্যান, ভাইস-চেয়ারম্যান হতে দিতে চাননা।
প্রথম দফার প্রার্থী হওয়া ৭৫ জনকে দ্বিতীয় দফায় বিএনপির প্রার্থী সংখ্যা বৃদ্ধি পাওয়া বিব্রত বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব। প্রথম ধাপের নির্বাচনে যাঁরা মনোনয়নপত্র দাখিল করেছেন, ততক্ষণ পর্যন্ত নির্বাচনের ব্যাপারে সিদ্ধান্তহীন ছিল দলটি। এ কারণে প্রথম ধাপের প্রার্থীদের ব্যাপারে দল কিছুটা সময় নিয়েছিল। এরপরও দ্বিতীয় দফায় এতো প্রার্থী মনোনয়নপত্র জমা দেবে তা ভাবতেও পারেনি বিএনপি।
এদিকে উপজেলা নির্বাচনে ভোটদানে নিরুৎসাহিত করতে এবার কর্মসূচি নিয়ে মাঠে নেমেছে বিএনপি। ভোট বর্জন করার আহ্বান জানিয়ে তৃণমূলে চালানো হচ্ছে ক্যাম্পেইন। বিতরণ করা হচ্ছে লিফলেট। উপজেলা নির্বাচনের শেষ ধাপ পর্যন্ত এ কর্মসূচি চলবে। দলটির দাবি, তাদের আহ্বানে সাড়া দিয়ে দেশের সংখ্যাগরিষ্ঠ জনগণ ৭ জানুয়ারির ভোট বর্জন করেছে। উপজেলা নির্বাচনেও একই ঘটনা ঘটবে।
রাজনৈতিক বিশ্লেষক হারুন-অর-রশিদ মনে করেন, বিএনপির এক দফা দাবি উত্থাপনের আগে জনগণের মনোভাব বোঝা উচিত ছিল। কিন্তু তারা সেটি আমলে নেয়নি। যথারীতি নির্বাচন হয়েছে এবং দেশের মানুষ ভালো আছে। স্থানীয় পর্যায়ের নির্বাচন নিয়ে জনগণের মনোভাব আমলে নিচ্ছে না বিএনপি। শুধু জনগণের নয়, বিএনপির তৃণমূলের মনোভাব বুঝতে চায়নি। যার কারণে কেন্দ্রীয় নির্দেশ অমান্য করে বিএনপির নেতারা উপজেলা নির্বাচনে অংশ নিচ্ছে।
রাজনৈতিক বিশ্লেষক সুভাষ সিংহ রায় বলেন, বিএনপি কখনোই দেশ নিয়ে ভাবেনি। তাদের দল যেভাবে গঠিত হয়েছে তাতে তারা কেবল নিজেদের ক্ষমতার রাজনীতি করতে চেয়েছেন। তিনি আরও বলেন, নিজের দলের নেতাদের ভোটে দাঁড়ানো থেকে বিরত রাখতে পারছেনা। অথচ সারাদেশে উপজেলা নির্বাচন বর্জনের ক্যাম্পেইন শুরু করেছে বিএনপি, যা খুবেই হাস্যকর।