৮ই জুলাই, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ | ২৪শে আষাঢ়, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ |
শিরোনাম
ফেনীতে ৬ দফা দাবিতে স্বাস্থ্য সহকারীদের অবস্থান কর্মসূচি দাগনভূঞায় দুর্নীতি প্রতিরোধ বিষয়ক বিতর্ক প্রতিযোগিতা ছাগলনাইয়ায় জাতীয় ফল মেলার উদ্বোধন নুরুল করিম মজুমদারের ৫ম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষ্যে বিভিন্ন মসজিদে দোয়া ও পথশিশুদের মাঝে খাবার বিতরণ অতীত পরিস্কার না হয়ে যদি নতুন করে একটা নির্বাচন হয় এটা হবে নির্বাচনকে গণহত্যা করার শামিল- ডা. শফিকুর রহমান মিরসরাইয়ে বিএনপির দুই গ্রুপের সংঘর্ষে উপজেলা বিএনপির সদস্যসচিব সহ আহত ১৫ জন ফেনীতে ট্রেন-সিএনজি সংঘর্ষে মা ও ছেলে নিহত, আহত-১ দাগনভূঞায় পেশাজীবি পরিষদের সভা আল আমিন নুরানি মাদ্রাসার ৫০ জন শিক্ষার্থী পেল নতুন ব্যাগ জয়নগর পশ্চিম পাড়া উদয়ন সংঘ ক্লাবের বর্ষপূর্তি
  • প্রচ্ছদ
  • টপ নিউজ >> মতামত
  • নির্বাচন পরবর্তী বিশ্ব গণমাধ্যমের প্রত্যাশা
  • নির্বাচন পরবর্তী বিশ্ব গণমাধ্যমের প্রত্যাশা

    দৈনিক আমার ফেনী

    সৈয়দ মো. সিয়াম
    কিছুদিন আগেই অনুষ্ঠিত হলো বাংলাদেশের দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন। দেশের সর্বত্রই এ মুহূর্তে নির্বাচন ও নবগঠিত সরকার কে কেন্দ্র করে চলছে মিশ্র আলোচনা। দেশের পাশাপাশি বিভিন্ন আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমেও এ নিয়ে আগ্রহের কমতি নেই। এ নিয়ে চলছে নানামুখী আলোচনা।
    প্রত্যেকেই যার যার মতো করে উপস্থাপন করে যাচ্ছে সংবাদ ও মতামত। যে যেভাবেই উপস্থাপন করুক না কেন আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে কিন্তু মূল আলোচ্য হলো বাংলাদেশের দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন, নির্বাচনে আওয়ামী লীগের বিজয় ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পঞ্চম বারের মতো বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী হিসাবে দায়িত্বভার গ্রহণ করা।
    যে যেভাবেই বিশ্লেষণ করুক না কেন বাংলাদেশ নামক সার্বভৌম রাষ্ট্রের জন্য এই নির্বাচন ছিল সাংবিধানিক ধারা অক্ষুন্ন রেখে জাতিকে সামনে এগিয়ে নিয়ে নানামুখী সংকটের হাত থেকে রক্ষা করার জন্য অন্যতম চ্যালেঞ্জ। বর্তমান বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন শেখ হাসিনা সরকার এক্ষেত্রে কিছু বিচ্ছিন্ন ঘটনা বাদে একটি জাতিকে একটি উৎসবমুখর নির্বাচন উপহার দিতে সক্ষম হয়েছেন। যার মাধ্যমে পুরো জাতি একটি সংকটময় পরিস্থিতির হাত থেকে রক্ষা পেয়েছে।
    এবারের এই নির্বাচন নিয়ে় নানা মহলের মিশ্র প্রতিক্রিয়া ছিল। নির্বাচনের ফলাফল বিশ্লেষণ করলে দেখা যায় বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ নির্বচনে ২২০+ আসনে জয়লাভ করেছে, ৬০+ আসনে স্বতন্ত্র প্রার্থীরা এবং ১৫+ আসনে জাতীয় পার্টি ও অন্যান্য দল জয়লাভ করেছে। বাংলাদেশের ইতিহাসে এত অধিকসংখ্যক স্বতন্ত্র প্রার্থীর জয়লাভ করা এবারেই প্রথম।
    এই নির্বাচনের আলোচিত নানা ঘটনাসমূহের মধ্যে একটি হচ্ছে দেশের অন্যতম বৃহৎ রাজনৈতিক দল বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি) ও নির্বাচনে অংশগ্রহণ না করা। যদিওবা বিএনপির নির্বাচন বর্জন করার ঘটনা কিংবা নির্বাচনে হেলে গেলে কারচুপির অভিযোগ করা নতুন কিছু না। এর আগেও তারা বেশ কিছু নির্বাচনে তারা অংশগ্রহণ করেনি।
    তারা যে দাবি নিয়ে নির্বাচনে অংশ নেয়নি সেটা হচ্ছে দলীয় সরকারের অধীনে তারা নির্বাচনে যাবে না। নির্দলীয় সরকারের অধীনে তারা নির্বাচনে অংশগ্রহণ করতে আগ্রহী। কিন্তু রাষ্ট্রযন্ত্র পরিচালনার সাংবিধানিক যে ভিত্তি বর্তমানে রয়েছে সেখানে দেশের স্বাভাবিক পরিস্থিতিতে দলীয় সরকারের অধীনেই নির্বাচন অনুষ্ঠানের কথা উল্লেখ রয়েছে।
    যার ব্যত্যয় ঘটলে কিংবা নির্বাচন সঠিক সময়ে অনুষ্ঠিত না হলে দেশের সাংবিধানিক সংকটে পরার সম্ভাবনা দেখা দেয়। এ ধরনের সংকটে পরলে দেশে যেকোনো ধরণের পরিস্থিতিই তৈরি হতে যা কখনোই দেশের জন্য কল্যাণকর কিছু বয়ে আনে না। আধুনিক সংসদীয় গণতন্ত্রের আইনসভা হচ্ছে মহান সংসদ যেখানে আলোচনার মাধ্যমে যেকোনো সমস্যার সমাধান করা সম্ভব। আর সংসদে আলোচনায় অংশ নিতে হলে একটি নৈর্বাচনিক প্রক্রিয়ায় অংশগ্রহণের মাধ্যমে জনগণের মেন্ডেট নিয়েই সেখানে যেতে হয়।
    বিএনপি সহ কয়েকটি দল নির্বাচনে অংশগ্রহণ না করার ফলে তাদের সমর্থক কিছু সংখ্যক ভোটার ভোট প্রদান থেকে বিরত থাকে। কিন্তু নির্বাচনের আগের দিন এবং নির্বাচনের দিন সারাদেশে হরতালের ডাক দেয় নির্বাচনে অংশ না দলসমূহ। যাদের প্রধান এজেন্ডাই ছিল দেশের চলমান গণতান্ত্রিক পরিবেশকে অস্থিতিশীল করা এবং নির্বাচনে ভোটারদের উপস্থিতি আশানুরূপ না থাকার জন্য হরতালের নাম দিয়ে মানুষকে বাসায় বন্দি করে রাখার জন্য নানা ধরণের ভীতিকর পরিস্থিতির তৈরি করা।
    ভোট গ্রহণের আগমুহূর্তে ট্রেনে অগ্নিসংযোগ করে নিরীহ মানুষকে হত্যার মতো জঘন্যতম নিন্দনীয় কাজ করতেও তারা দ্বিধাবোধ করেনি। এসকল ঘটনার বিরূপ প্রভাব এদেশের শান্তিপ্রিয় জনগণের মনে কিছুটা হলেও ভীতির সঞ্চার করেছে। এরসাথে ভোট কেন্দ্রের আশেপাশে ভোটের আগের দিন অগ্নিসংযোগ, ককটেল বিস্ফোরণের খবর বিভিন্ন গণমাধ্যম সূত্রে জানা গেছে। যার ফলে ৭ জানুয়ারি অনুষ্ঠিত নির্বাচনে ভোটার উপস্থিতির উপর কিছুটা প্রভাব বিস্তার করেছে।
    এতকিছুর পরেও নির্বাচন কমিশন সূত্রমতে প্রায় ৪০ শতাংশ ভোটার নির্বাচনে ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে গিয়েছিলেন, তবে মিডিয়া রিপোর্ট এবং অন্যান্য বিশ্লেষকদের মতে এ সংখ্যার খানিকটা মতদ্বৈততা রয়েছে তবে সংখ্যার বিচারে তার পার্থক্য খুব বেশি নয়। যেভাবেই হোক, এটা স্পষ্ট যে বাংলাদেশের মানুষ ভোট দিয়েছে এবং নির্বাচন সুষ্ঠু হয়েছে।
    নির্বাচন কমিশনের তথ্যানুযায়ী দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে কেন্দ্রীয়ভাবে ভোট পর্যবেক্ষণের অনুমতি দেওয়া ৪০টি পর্যবেক্ষক সংস্থার ৫১৭ জন সহ স্থানীয়ভাবে ৮৪টি পর্যবেক্ষণ সংস্থার ২০ হাজার ২৫৬ জন ভোট পর্যবেক্ষণ করেন। দেশি পর্যবেক্ষক ছাড়াও আন্তর্জাতিক বিভিন্ন নির্বাচন পর্যবেক্ষক সংস্থার পাশাপাশি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, ইউরোপীয় ইউনিয়ন, জাপান, ভারতসহ বিভিন্ন দেশের প্রায় ২৫০ জনের অধিক বিদেশি পর্যবেক্ষক ও সাংবাদিক ভোট পর্যবেক্ষণ করেন। নির্বাচনে পর্যবেক্ষক সংস্থার প্রতিনিধিরাও নির্বাচন নিয়ে সন্তোষ প্রকাশ করেছেন। সামান্য কিছু বিচ্ছিন্ন ঘটনা যে ঘটেনি এমনটাও বলা যাচ্ছেনা। তবে সামান্য কিছু ঘটনা বাদ দিলে নির্বাচন এবং ভোট প্রদান আয়োজনকে সফল বলা চলে।
    এবারে আসা যাক দেশী বিদেশী মিডিয়া প্রকাশিত বিভিন্ন সংবাদে বাংলাদেশের এ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে মিশ্র ধরণের সংবাদ পরিবেশিত হয়েছে। কোথাও আবার প্রকৃত ঘটনাগুলোর আড়ালে বিচ্ছিন্নভাবে ঘটা ঘটনাসমূহকে প্রাধান্য দিয়ে সংবাদ পরিবেশন করা হয়েছে। আবার ইতিবাচকভাবেও সংবাদ প্রচার হয়েছে কোন কোন সংবাদমাধ্যমে। কিন্তু এত কিছুর পরেও দেশের ৪০শতাংশ ভোটারের রায়ই প্রাধান্য পাবে। কেননা তারা তাদের গুরুত্বপূর্ণ ভোটাধিকার প্রয়োগের মাধ্যমেই তাদের প্রতিনিধিকে নির্বাচিত করেছে।
    যদিওবা জনমনে ভীতির সঞ্চার না হলে এই সংখ্যা বেড়ে গিয়ে ৬০ শতাংশ বা এর অধিক হতে পারতো। তখন হয়তোবা এসকল অভিযোগেরও কোন ভিত্তি থাকতো না। আর প্রতিক্রিয়াশীল গোষ্ঠীর পক্ষে নির্বাচনের ফলাফল না গেলে কারচুপি সহ ভোট সুষ্ঠু হয় নি এমন অভিযোগ নতুন কিছু না। সবচেয়ে বড় কথা নির্বাচনে জনগণের অংশগ্রহণ আর ভোট প্রদান করা। কেননা অবাধ তথ্য প্রবাহের যুগে মানুষ এখন আর বিভিন্ন গুজবেও কান দেয় না আর নিজের অধিকার আদায়েও অনেক বেশি সচেতন।

    তারা জানে দেশের যে চলমান উন্নয়ন প্রক্রিয়া অব্যাহত রয়েছে। তা স্থবির হয়ে যাবে সাংবিধানিক প্রক্রিয়ায় সরকার গঠন প্রক্রিয়া বিঘিœনত হলে। আর তাই জনগণ তাদের নিজেদের প্রয়োজনেই, জাতির বৃহৎ স্বার্থে ভোটের মাধ্যমে নির্বাচিত সরকারকে আবারোও ক্ষমতায় নিয়ে আসলো।
    এরই মধ্যে প্রতিবেশী দেশ ভারত, রাশিয়া সহ বিভিন্ন দেশের সরকারপ্রধানগণ মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পুনরায় নির্বাচিত হয়ে সরকার গঠন করায় অভিনন্দন জানিয়েছেন। আন্তর্জাতিক পরিম-ল থেকেও এ অভিনন্দনের ধারা এবং নির্বাচন নিয়ে তাদের সন্তোষ প্রকাশ অব্যাহত রয়েছে। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এরই মন্ত্রীসভার গঠন করে দেশের চলমান উন্নয়ন কর্মকা-সমূহ চালু রাখা এবং অগ্রাধিকার ভিত্তিতে সবচেয়ে চ্যালেঞ্জিং কাজ দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণের কাজ এরই মধ্যে শুরু করে দিয়েছেন।
    নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিগণ এ ডাকে সারা দিয়ে নিজ নিজ নির্বাচনী এলাকায় তাদের কাজও এরই মধ্যে শুরু করে দিয়েছেন। এখন প্রয়োজন শুধু জনগণের সহযোগিতা আর ধৈর্য ধারণ করে পাশে থাকা। আর আগামীর দিনগুলোতে উন্নত স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ার পথে জনগণের ভোটে নির্বাচিত সরকার এগিয়ে যাবে এভাবেই জনগণের ভালোবাসা নিয়ে।
    লেখক: সহকারী অধ্যাপক, শিক্ষা বিভাগ, নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়।

    আরও পড়ুন

    ফেনীতে ৬ দফা দাবিতে স্বাস্থ্য সহকারীদের অবস্থান কর্মসূচি
    দাগনভূঞায় দুর্নীতি প্রতিরোধ বিষয়ক বিতর্ক প্রতিযোগিতা
    ছাগলনাইয়ায় জাতীয় ফল মেলার উদ্বোধন
    নুরুল করিম মজুমদারের ৫ম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষ্যে বিভিন্ন মসজিদে দোয়া ও পথশিশুদের মাঝে খাবার বিতরণ
    অতীত পরিস্কার না হয়ে যদি নতুন করে একটা নির্বাচন হয় এটা হবে নির্বাচনকে গণহত্যা করার শামিল- ডা. শফিকুর রহমান
    মিরসরাইয়ে বিএনপির দুই গ্রুপের সংঘর্ষে উপজেলা বিএনপির সদস্যসচিব সহ আহত ১৫ জন
    ফেনীতে ট্রেন-সিএনজি সংঘর্ষে মা ও ছেলে নিহত, আহত-১
    দাগনভূঞায় পেশাজীবি পরিষদের সভা