বিশেষ প্রতিনিধি
দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে গোপালগঞ্জ-৩ আসনে ‘নৌকা’ প্রতীকে নির্বাচন করছেন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এই আসনে তার পক্ষে দিন-রাত এক করে প্রচারণা চালাচ্ছেন দল ও অঙ্গ সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা।
গোপালগঞ্জ সদর থেকে টুঙ্গিপাড়া উপজেলায় প্রবেশ করতেই নজরে পড়ে প্রধানমন্ত্রীর নামে বিভিন্ন ব্যানার, ফেস্টুন, পোস্টার। যাতে স্মার্ট বাংলাদেশ ও উন্নয়নের ধারা অব্যাহত রাখার বিষয়ে নানা প্রচারণার পাশাপাশি নৌকা মার্কায় ভোট চাওয়া হয়েছে। তবে একতারা, ডাব ও আম প্রতীকেরও কিছু প্রচারণা আছে।
আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা মনে করেন, প্রধানমন্ত্রীর বিপরীতে যেই থাকুক না কেনো ফলাফলে খুব বেশি হেরফের হওয়ার সুযোগ নেই। তারপরেও তারা জনগণের সামনে প্রধানমন্ত্রী কাজ ও সুফলগুলো তুলে ধরছেন। প্রচারণা কাজে ব্যস্ত এক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী বলেন, এখানে আলাদাভাবে প্রচারের দরকার হয় না। এখনও কোনধরনের অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেনি, ঘটবেও না। উৎসবমুখর পরিবেশে ভোট হবে। কারণ এখানে সবাই নৌকা।
৩০ ডিসেম্বর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়ার শেখ মুজিবুর রহমান সরকারি কলেজ মাঠে নির্বাচনি জনসভায় সমাবেশে যোগ দেন। সেখানে তিনি বলেন, ‘এই নির্বাচন খুব শান্তিপূর্ণভাবে হতে হবে। এই নির্বাচন যাতে না হয় তা নিয়ে যে চক্রান্ত, তার সমুচিত জবাব ৭ জানুয়ারি নির্বাচনের মধ্য দিয়ে আমরা দেবো। বাংলাদেশের মানুষের ভাগ্য নিয়ে আর কেউ ছিনিমিনি খেলতে পারবে না।’
এর আগের দিন ২৯ ডিসেম্বর সকালে গোপালগঞ্জ জেলার টুঙ্গিপাড়া উপজেলার বিভিন্ন স্থানে ‘নৌকা’ প্রতীকের পক্ষে মিছিল বের করা হয়। মিছিল বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে। পরে নেতাকর্মীরা বাড়ি বাড়ি গিয়ে শেখ হাসিনার পক্ষে নৌকায় ভোট চেয়ে লিফলেট বিতরণ করেন। উৎসবমুখর পরিবেশে আগামী ৭ জানুয়ারি কেন্দ্রে গিয়ে ভোট দিতে ভোটারদের প্রতি আহ্বান জানান নেতারা।
এসময় অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন টুঙ্গিপাড়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সিনিয়র সভাপতি মো. ইলিয়াস হোসেন, টুঙ্গিপাড়া পৌর মেয়র শেখ তোজাম্মেল হক টুটুল, টুঙ্গিপাড়া উপজেলা আওয়ামী লীগের ধর্ম বিষয়ক সম্পাদক এস এম জাকির হোসেন, টুঙ্গিপাড়া পৌর আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ সাইফুল ইসলাম, সাধারণ সম্পাদক মো. ফোরকান বিশ্বাস, টুঙ্গিপাড়া উপজেলা যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক বিএম মাহমুদ হক প্রমুখ।
প্রধানমন্ত্রী নির্বাচনি জনসভায় যোগ দিতে গত দুই সপ্তাহ সারাদেশে একের পর এক এলাকায় ছুটে বেড়িয়েছেন। সমাবেশ থেকে পরিচয় করিয়ে দিয়েছেন দলের প্রার্থীদের। নিজ আসনে জনসভায় তিনি সরকারের উন্নয়ন কর্মকাণ্ডের নানা বিষয়ে তিনি বলেন, ‘আমি উন্নয়নের কথা বলতে চাই না। যেটা হয়েছে সেটা আপনারা নিজেরাই জানেন। দেশটা বদলে গেছে এখন। আমি চাই আমাদের ছেলেমেয়েরা লেখাপড়া শিখবে। তারা দক্ষ জনশক্তি হিসেবে গড়ে উঠবে। আমরা ২০৪১ সালের মধ্যে স্মার্ট বাংলাদেশ করবো।’
নির্বাচনের প্রচারণার শেষ সময়ে টুঙ্গিপাড়ায় নেতাকর্মীদের মধ্যে ব্যাপক উৎসবের আমেজ লক্ষ্য করা গেছে। ইতোমধ্যে ভোটারদের বাড়ি বাড়ি গিয়ে নেতাকর্মীরা প্রধানমন্ত্রীর পক্ষে ভোট চাওয়া শেষ করেছেন।
জেলার কোটালীপাড়া ও টুঙ্গিপাড়া নিয়ে গঠিত আসনটি। ভোটার সংখ্যা ২ লাখ ৯০ হাজার ২৫৪ জন। আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনাসহ এখানে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন ৬ জন প্রার্থী। অন্যরা হলেন- একতারা প্রতীক নিয়ে বাংলাদেশ সুপ্রিম পার্টির এম নিজাম উদ্দিন লস্কর, গোলাপ ফুল প্রতীক নিয়ে জাকের পার্টির মাহাবুর মোল্যা, মাছ প্রতীকে গণফ্রন্টের সৈয়দা লিমা হাসান, আম প্রতীকে ন্যাশনাল পিপল্স পার্টির (এনপিপি) শেখ আবুল কালাম এবং ডাব প্রতীকে বাংলাদেশ কংগ্রেসের মো. সহিদুল ইসলাম মিন্টু।