মিনার সুলতান
একেবারে গোল্ডফিশ না হলেও অনেকটা ভুলোমনা বাঙালি জাতি অসাংবিধানিক ও অবৈধ শক্তির পকেটে জন্ম নেয়া কিংস পার্টি বিএনপির ইতিহাস ভুলে গেছে। দেশের সর্বোচ্চ আদালত কর্তৃক সংবিধান লংঘনকারী ও অসাংবিধানিক শাসক হিসেবে ঘোষিত জিয়ার কারফিউ গণতন্ত্রের কথা আমরা ভুলে গেলেও ইতিহাসে সঠিকভাবেই লিপিবদ্ধ আছে।
সামরিক শাসক জিয়াউর রহমান অবৈধভাবে রাষ্ট্রীয় ক্ষমতা দখল করে তা পাকাপোক্ত করতে কখনো বন্দুকের নলকে ব্যবহার করেছেন, কখনো ৭১ এর পরাজিত শক্তিকে ব্যবহার করেছেন। সর্বশেষ সামরিক শাসকের উর্দি খুলে পুরোদমে রাজনীতিবিদ হওয়ার চেষ্টা করেছেন তিনি। আর রাজনীতিবিদ হলে তো দরকার একটি রাজনৈতিক দলের, সেজন্যই সামরিক ছায়াতলে গড়ে তুলেছিলেন বিএনপি নামক দলটি। সাধারণ মানুষের ইচ্ছা আকাঙ্খার বাইরে গঠিত হওয়া বিএনপিকে জিয়াউর রহমানের পর পরিচালনা করেছেন খালেদা জিয়া, আর বর্তমান মুমুর্ষ বিএনপির নেতৃত্বে রয়েছে জিয়া-খালেদাপূত্র তারেক রহমান।
জিয়াউর রহমানের হাত ধরে যেভাবে গঠিত হয় বিএনপি
১৯৭৫ সালের ১১ নভেম্বর বেতার ও টেলিভিশন ভাষণে মেজর জেনারেল জিয়াউর রহমান বলেছিলেন, ‘আমি রাজনীতিবিদ নই। আমি একজন সৈনিক। রাজনীতির সাথে আমার কোন সম্পর্ক নেই এবং আমাদের সরকার সম্পূর্ণ নির্দলীয় ও অরাজনৈতিক।’ মিথ্যার আশ্রয় নিয়ে জিয়াউর রহমানের রাজনীতিবিদ সাজার সেই থেকে শুরু। পাকিস্তানের সেনাপতি আইয়ুব খান যেভাবে নিজেকে ধাপে ধাপে ক্ষমতার শীর্ষে নিয়ে গিয়েছিলেন, জেনারেল জিয়াও তার পদাঙ্ক অনুসরন করেই এগুতে থাকেন এবং অবশেষে গন্তব্যে পৌছে যান।
বঙ্গবন্ধুকে হত্যা এবং সেনাপ্রধানের পদ দখল: ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে সপরিবারে হত্যার মাধ্যমে জিয়া তার প্রথম ধাপটি সম্পন্ন করে। এই হত্যাকা-ের আরেক অন্যতম কুশীলব খন্দকার মুশতাক ১৬ আগস্ট প্রেসিডেন্টের ক্ষমতা দখল করে এবং ২৪ আগস্ট জিয়াউর রহমান সেনাবাহিনীর প্রধান হিসেবে ক্ষমতার দৃশ্যপটে চলে আসে।
মুক্তিযোদ্ধা সেনা ও আওয়ামী লীগ নেতাদের হত্যা: সেনাপ্রধান হয়েই সবার আগে জিয়া সেনাবাহিনীতে শৃঙ্খলা ফেরানোর নামে তাকে চ্যালেঞ্জ জানানো সেনা অফিসারদের হত্যা করতে লাগলেন, হত্যা করলেন মুক্তিযোদ্ধা সৈনিকদের,আওয়ামী লীগের জাতীয় চার নেতাও বাদ যায়নি তার রোষানল থেকে। জেলখানায় বন্দী অবস্থায় তাদের নির্মম ভাবে হত্যার নির্দেশ দিলেন। এমনকি যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের জন্য করা দালাল আইন বাতিল এবং বঙ্গবন্ধুর খুনীদের রক্ষাকবচ হিসেবে ইনডেমনিটি অধ্যাদেশ জারি করলেন।
প্রধান সামরিক আইন প্রশাসকের পদ দখল: ১৯৭৫ সালের ৬ নভেম্বর দেশের রাষ্ট্রপতির দায়িত্বভার পান প্রধান বিচারপতি আবু সাদাত মোহাম্মদ সায়েম। তিনি একই সাথে দেশের রাষ্ট্রপতি এবং প্রধান সামরিক আইন প্রশাসক। রাষ্ট্রপতি ও প্রধান সামরিক আইন প্রশাসক উভয়ক্ষেত্রেই বিচারপতি সায়েম ছিলেন ক্ষমতাহীন। মূল ক্ষমতা ছিল জিয়ার হাতে।১৯ নভেম্বর জিয়া তার ক্ষমতার ব্যবহার করে রাষ্ট্রপতি আবু সাদাম মোহাম্মদ সায়েমের কাছ থেকে প্রধান সামরিক আইন প্রশাসকের পদটি কেড়ে নেয়।
রাষ্ট্রপতির পদ দখল: বিচারপতি সায়েম রাষ্ট্রপতির পদে আসীন হয়ে বলেছিলেন-“সম্ভব হলে ’৭৭ এর ফেব্রুয়ারির আগেই নির্বাচন। কিন্তু জিয়াউর রহমান নির্বাচন দিতে চাননি। নির্বাচন হলে জিয়া তার অভীষ্ট লক্ষে কোনভাবেই পৌছাতে পারবেনা। তাই ১৯৭৭ সালের ২১ এপ্রিল রাষ্ট্রপতি সায়েমকে বন্দুকের নলের ভয় দেখিয়ে নিজেই রাষ্ট্রপতির ক্ষমতা দখল করে বসে।
হ্যাঁ / না ভোট আয়োজন ১৯৭৭: একই সাথে দেশের রাষ্ট্রপতি, সেনা প্রধান এবং প্রধান সামরিক আইন শাসক জিয়াউর রহমান। সেনাবাহিনীতে দৃশ্যত তাঁকে চ্যালেঞ্জ করার মতো কেউ ছিলনা। দেশের ভেতরে রাজনৈতিক বিরোধীরা বিভক্ত, বিচ্ছিন্ন এবং দিশেহারা। তারপরেও জিয়াউর রহমানকে প্রমাণ করতে হবে, তাঁর পেছনে জনসমর্থন আছে; শুধু বন্দুকের জোরে ক্ষমতায় বসেননি।
সামরিক শাসনকে পর্যায়ক্রমে বৈধ করার জন্য জিয়া নানামুখী তৎপরতা শুরু করে। ১৯৭৭ সালের ৩০ মে তার রাষ্ট্রপতি নিয়োগকে বৈধতা দেয়ার জন্য প্রথমেই আয়োজন করে হ্যাঁ/না ভোটের। মূলত এই হ্যাঁ/না ভোটের মাধ্যমেই বাংলাদেশের নির্বাচন ব্যবস্থা প্রশ্নবিদ্ধ হওয়া শুরু করে। এতে ভোটার উপস্থিতি ২ শতাংশের নিচে হলেও দেখানো হয় ৮৮ শতাংশ। আর প্রদত্ত ভোটের ৯৮ শতাংশই দেখানো হয় জিয়ার পক্ষে। ভোটার উপস্থিতির এ হার মোটেও বিশ্বাসযোগ্য ছিল না। হ্যাঁ/না ভোটের মাধ্যমে শুধু রাজনৈতিক বৈধতার একটি ছাড়পত্র তৈরি করেছিলেন জিয়াউর রহমান।
প্রহসনের রাষ্ট্রপতি নির্বাচন ১৯৭৮: রাষ্ট্রপতি নির্বাচন অধ্যাদেশ অনুযায়ী কোন সরকারি চাকরিজীবি ও সরকারি বেতন গ্রহীতার রাষ্ট্রপতি নির্বাচনে প্রার্থী হবার সুযোগ ছিলনা। কিন্তু জিয়া সকল আইন ভঙ্গ করে ১৯৭৮ সালের ৩জুন নির্বাচনে অংশগ্রহন করে। আর্মি, পুলিশ এবং সরকারি চাকরজীবীদের ন্যাক্কারজনকভাবে তার পক্ষ অবলম্বন করতে বাধ্য করা হয়। প্রহসনের এই নির্বাচনে প্রকাশ্য ও গোপন কারচুপির মাধ্যমে শতকরা ৭৬ ভাগ ভোট নিজের দেখিয়ে জিয়া রাষ্ট্রপতি বনে যান। ১৫ ডিসেম্বর এক ফরমান জারির মাধ্যমে রাষ্ট্রীয় শাসনব্যবস্থায় পরিবর্তন এনে সব ক্ষমতা রাষ্ট্রপতির নামে করে নিজের হাতে ক্ষমতা কুক্ষিগত করে নেয়।
জাগদল গঠন: দিন দিন রাজনৈতিক দলগুলোর তৎপরতা বৃদ্ধি এবং নির্বাচনমুখী রাজনীতি শুরু হলে জিয়াউর রহমান একটি রাজনৈতিক ফ্রন্ট গঠনের পরিকল্পনা করতে থাকেন। যাতে করে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের সমন্বয়ে একটা বিস্তৃত প্লাটফর্ম বানানো যায়। একটা নির্দিষ্ট দর্শন ও কর্মসূচির চেয়ে তাঁর কাছে বেশি গুরুত্বপূর্ণ ছিল ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগের পাল্টা একটা বড়সড় মঞ্চ তৈরি করা। সে লক্ষে ১৯৭৮ সালের ৪ ফেব্রুয়ারি ‘জাতীয়তাবাদী গণতান্ত্রিক দল’ বা ‘জাগদল’ নামে নতুন একটি রাজনৈতিক দল তৈরির ঘোষণা দেন। তিনি নিজে থাকলেন নেপথ্যে। জাগদলের আহবায়ক করা হল জিয়ার একান্ত অনুগত ভাইস প্রসিডেন্ট আব্দুস সাত্তারকে।
জাগদল থেকে বিএনপি: সে সময় জাগদল রাজনীতিতে তেমন ঢেউ তুলতে পারেনি। রাজনৈতিক মাঠের চেনা মুখগুলো জাগদলে খুব কমই যোগ দিয়েছিল।এছাড়া চতুর জিয়া অল্প সময়ের মধ্যেই বুঝতে পেরেছিল, জোটের মধ্যে শতভাগ অনুগত একটা দল না থাকলে জোটকে নিয়ন্ত্রণ করা যাবে না। তাঁদের একতার একটাই ভিত্তি ছিল, তারা সবাই ছিলেন আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে এককাট্টা। নানান মত ও পথের জাগদল নিয়ে জিয়াউর রহমান স্বস্তিতে ছিলেন না। তিনি ‘একমনা’ লোকদের নিয়ে আলাদা দল তৈরির সিদ্ধান্ত নিলেন। ১৯৭৮ সালের ২৮ আগষ্ট ‘জাগদল’ বিলুপ্তির ঘোষণা করা হয়। আর ১লা সেপ্টেম্বর ঢাকার রমনা রেস্তোরাঁ প্রাঙ্গনে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে জিয়াউর রহমান নতুন রাজনৈতিক দলের ঘোষণা দেন, যার নাম বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল, সংক্ষেপে বিএনপি। একই সাথে দলের চেয়ারম্যান হিসেবে নিজের নাম ঘোষণা করেন।
খালেদা জিয়ার হাত ধরে যেভাবে বিকশিত হয় বিএনপি
বিএনপির ওয়েবসাইটে দেয়া তথ্য অনুযায়ী ১৯৮২ সালের ১৩ জানুয়ারি একজন রাজনৈতিক কর্মী হিসেবে খালেদা জিয়া আত্মপ্রকাশ করেন। সে দিন তিনি বিএনপির প্রাথমিক সদস্যপদ লাভ করেন। একই বছর ৭ই নভেম্বর জিয়াউর রহমানের সমাধিস্থলে শ্রদ্ধা নিবেদন করতে গিয়ে খালেদা জিয়া প্রথম বক্তব্য রাখেন।
১৯৮১ সালের ৩০ মে জিয়াউর রহমান নিহত হলে প্রথমে বিএনপির চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পালন করেন আব্দুস সাত্তার। চেয়ারম্যান হিসেবে আব্দুস সাত্তার দ্বায়িত্বে থাকলেও ধীরে ধীরে খালেদা জিয়া দলের ভেতর নিজের প্রভাব বিস্তার করতে থাকেন। পরবর্তীতে ১৯৮৪ সালের ১০ই মে খালেদা জিয়া বিএনপির চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন। স্বামী জিয়াউর রহমানের মতই যুদ্ধাপরাধী ও পাকিস্তানপন্থী রাজনীতিবিদদের দিয়ে দল পরিচালনা করতে থাকেন খালেদা জিয়া। সেসময় রাষ্ট্রীয় ক্ষমতায় আরেক স্বৈরশাসক জেনারেল এরশাদ।
আওয়ামী লীগের নেতৃত্বে স্বৈরাচার এরশাদ বিরোধী আন্দোলনে সেসময় খালেদা জিয়াও অংশগ্রহণ করেন। স্বৈরাচার এরশাদের পতন হলে পঞ্চম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ১৯৯১ সালে স্বামী জিয়াউর রহমানের পদাঙ্ক অনুসরণ করে কূটকৌশলে ব্যালট ডাকাতির মাধ্যমে প্রথমবারের মতো প্রধানমন্ত্রী হন খালেদা জিয়া। খালেদা জিয়ার নেতৃত্বে ক্ষমতায় অধিষ্ঠিত হওয়ার পর বিএনপির আসল চরিত্র ফুটে উঠে দেশের মানুষের কাছে। সারাদেশে বিএনপির মাধ্যমে সন্ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করেন খালেদা জিয়া।
সারাদেশে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা মাস্তান, চাঁদাবাজ, সন্ত্রাসীদের সবচেয়ে নিরাপদ আশ্রয়স্থল ছিলেন ম্যাডাম খ্যাত খালেদা জিয়া। জানা যায়, খালেদা জিয়ার রাজনীতিতে একটি অঘোষিত কৌশল ছিল- সন্ত্রাস, চাঁদাবাজি, গুন্ডামিতে যে যতো বেশি সাহস দেখাতে পারতো খালেদা জিয়া তাদের ডেকে ডেকে বিএনপি, যুবদল, ছাত্রদলে পদায়ন করতেন।
সন্ত্রাসী কার্যক্রমে মুগ্ধ হয়ে নাসিরুদ্দিন আহমেদ পিন্টুকে খালেদা জিয়া ছাত্রদলের সভাপতি নির্বাচিত করেছিলেন। শুধু তাই নয় পুরান ঢাকার একসময়ের আতঙ্ক এই পিন্টুকে ২০০১ সালের নির্বাচনে দলীয় মনোনয়নে সংসদ সদস্যও বানিয়েছিলেন খালেদা জিয়া।
২০০১ সালের নির্বাচনে স্বাধীনতা বিরোধী অপশক্তি জামাতের সাথে জোটবদ্ধ ভাবে ক্ষমতায় অধিষ্ঠিত হয় বিএনপি। খালেদা জিয়ার নেতৃত্বে জামাতের পৃষ্ঠপোষকতায় সেসময় বিএনপি জঙ্গিবাদের আখড়ায় পরিণত হয়েছিল। বিভিন্ন নিষিদ্ধ মৌলবাদী সংগঠনের প্রধানদের সাথে সরাসরি যোগাযোগ রাখতেন খালেদা জিয়া। সেসময় তিনি সংবাদ মাধ্যমের বয়াতে জঙ্গি মাতা হিসেবে আবির্ভুত হয়েছিলেন। খালেদা জিয়ার নেতৃত্বে যুদ্ধাপরাধীদের মন্ত্রীসভায় স্থান দিয়েছিল বিএনপি
যুদ্ধাপরাধের দায়ে অভিযুক্ত দল স্বাধীনতাবিরোধী জামাত-শিবিরের সঙ্গে বিএনপির রাজনৈতিক মৈত্রী দীর্ঘদিনের। দলটির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমানই প্রথম এদেশে স্বাধীনতাবিরোধী জামায়াত-মুসলিম লীগকে রাজনৈতিকভাবে পুনর্বাসিত করেন। এমনকি কুখ্যাত স্বাধীনতাবিরোধী শাহ আজিজকে প্রধানমন্ত্রী করা ছাড়াও অনেক যুদ্ধাপরাধীকে মন্ত্রীও করেন জিয়াউর রহমান।
খালেদা জিয়া বিএনপির নেতৃত্বে আসার পর এই ধারাবাহিকতা বজায় রাখেন। অনেক চিহ্নিত যুদ্ধাপরাধীকে দলের গুর্বত্বপূর্ণ পদে অধিষ্ঠিত করেন তিনি। ১৯৯১ সালের নির্বাচনে স্বাধীনতাবিরোধী জামাতে ইসলামীর সঙ্গে সমঝোতা করে প্রথমবার নির্বাচনী বৈতরণী পার হয় বিএনপি। সেবার মন্ত্রিসভায় স্থান পায় রাজাকার মতিনসহ একাধিক যুদ্ধাপরাধী। ২০০১ সালে স্বাধীনতাবিরোধী জামাতের সঙ্গে প্রকাশ্য নির্বাচনী জোট গড়ে আবারও ক্ষমতায় আসে বিএনপি। মন্ত্রিসভায় স্থান দেয়া হয় শীর্ষ দুই যুদ্ধাপরাধী জামাতের আমির মতিউর রহমান নিজামী ও সেক্রেটারি জেনারেল আলী আহসান মুজাহিদকে। আরেক শীর্ষ যুদ্ধাপরাধী বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরীকে করা হয় তৎকালীন প্রধানমন্ত্রীর সংসদ বিষয়ক উপদেষ্টা।
তারেক রহমানের নেতৃত্বে যেভাবে ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে বিএনপি
গত এক দশকে উপরে বিরোধী দলে থেকেও রাজনীতিতে কোন ধরণের প্রভাব ফেলতে ব্যর্থ হয়েছে বিএনপি। বেগম জিয়ার শিক্ষাগত ও রাজনৈতিক কৌশলের অভাব পূরণে তারেক রহমানকে বিকল্প ভেবেছিল বিএনপি। কিন্তু তারেক রহমানের অপকর্ম ও ভুল রাজনৈতিক দর্শনের কারণে দলটির কপালে জুটেছে বদনাম। ক্ষমতার অপব্যবহার ও সীমাহীন লুটপাটে নিমজ্জিত তারেকের কারণে বেগম জিয়াকেও দুর্ণাম ও পরিণাম ভোগ করতে হচ্ছে বলে মনে করছেন রাজনীতিক সচেতনরা।
তারেক রহমানের লালসা ও দুর্নীতির পাশাপাশি তার সবচেয়ে বড় রাজনৈতিক ভুল হলো অযোগ্য ও অদক্ষদের গুরুত্বপূর্ণ পদ বিতরণ করা। পারিবার কেন্দ্রিক রাজনৈতিক দল হওয়ায় তারেক রহমানের মতো অযোগ্য মানুষ দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান হতে পেরেছেন। তারেক রহমানের উপযুক্ত শিক্ষার অভাব রয়েছে। যার কারণে যৌবনের শুরুতেই বখে গিয়েছিলেন। তার এই গু-ামির স্বভাব পরিণত বয়সের রয়ে গেছে। তারেকের অযোগ্য নেতৃত্বের কারণে বিএনপিকে ভুগতে হচ্ছে। নেতৃত্বে বড় ধরণের পরিবর্তন না আসলে বিএনপিকে নিয়ে আশাবাদী হওয়ার কোন কারণ থাকবে না।
২০০১ সালে বিএনপি যখন ক্ষমতায় তখন সীমাহীন দুর্নীতি করে দেশকে দুর্নীতির আখড়া বানিয়েছিল তারেক। তারেকের কারণে দেশে জঙ্গিবাদ-সন্ত্রাসবাদ মাথাচাড়া দিয়েছিল। আদর্শহীন, অযোগ্য, অবিবেচককে নেতা বানিয়ে বিএনপি তার বর্তমান-ভবিষ্যৎ রাজনীতিকে ঝুঁকির মুখে ফেলে দিয়েছে। তারেক বিএনপির জন্য অশনি সংকেতের মতো।
লেখক: গণমাধ্যমকর্মী।