জমির বেগ
ফেনী-৩ আসনে (দাগনভূঞা, সোনাগাজী) গতবারের মতো এবার ও আওয়ামী লীগ কোন প্রার্থী নেই। এ আসনটি মহাজোট ছেড়ে দিয়েছে জাতীয় পার্টি (লাঙ্গল) প্রার্থী লে. জেনারেল (অব.) মাসুদ উদ্দিন চৌধুরীকে। এ আসন থেকে কেন্দ্রীয় যুবলীগের সাবেক প্রেসেডিয়াম সদস্য আবুল বাশার আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পেয়েছিলেন। পরবর্তীতে কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের নির্দেশনা অনুযায়ী আবুল বাশার তার মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করে নেন।
ফেনী-৩ আসনে বর্তমানে প্রতিদ্বন্দ্বীতা করছেন ১০ জন প্রার্থী। তাদের মধ্যে তিনজন আদালতে রিট করে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বীতা করার বৈধতা পেয়েছেন। সে হিসেবে ফেনী-৩ আসনে আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী রয়েছেন তিনজন। বাস্তবে এ আসনে লাঙ্গলের প্রার্থী একেবারেই ভালো অবস্থানে নেই। বিদ্রোহী আওয়ামী লীগের প্রত্যেক প্রার্থীর অবস্থান লাঙ্গলের প্রার্থী থেকে অনেক ভালো বলে জানা যায়।
এ আসনে আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থীরা হলেন, সাবেক সংসদ সদস্য ও জেদ্দা আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি রহিম উল্যাহ, আবুল বাশারের ছেলে কেন্দ্রীয় যুবলীগের সদস্য ইঞ্জিনিয়ার ইসতিয়াক আহমেদ সৈকত ও প্রবাসী আওয়ামী লীগ নেতা আবদুল কাশেম আজাদ (স্বতন্ত্র)। এ আসনে স্বতন্ত্র প্রার্থী সাবেকে জাতীয় পার্টির নেতা মো. আনোয়ারুল কবির (স্বতন্ত্র) প্রতিদ্বন্দ্বীতা করছেন। এলাকায় তারও কিছু জনসম্পৃক্ততা রয়েছে।
এদিকে ফেনী জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও ফেনী সদর আসনের এমপি নিজাম হাজারী, ফেনী-৩ আসনের দাগনভূঞা ও সোনাগাজীতে লাঙ্গলের পক্ষে গণসংযোগ করেছেন। আওয়ামী লীগের প্রতিটি ইউনিটকে তিনি লাঙ্গলের পক্ষে কাজ করতে নির্দেশনা দিয়েছেন। নিজাম হাজারীর নির্দেশনা মোতাবেক দলীয় নেতা কর্মীরা মাসুদ চৌধুরীর পক্ষে মাঠে নামলেও আন্তরিকতার যথেষ্ট ঘাটতি রয়েছে বলে জানা যায়।
আওয়ামী লীগ, যুবলীগ ও ছাত্রলীগের অনেক নেতাকর্মীর সাথে আলাপ করে বুঝা গেছে, তারা দলীয় সিদ্ধান্ত অনুযায়ী লাঙ্গলের ভোট করলেও তাদের পরিবারের সদস্যরা ভোট কেন্দ্রে আসবে না। সে হিসেবে এ আসনে ভোটারদের কেন্দ্রে আনাই এখন সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে। যারা মাসুদ চৌধুরীর পক্ষে নির্বাচন করতে মাঠে নেমেছে তারাও শেষ পর্যন্ত লাঙ্গলের পক্ষে থাকার সম্ভাবনা ক্ষীন বলে জানা যায়।
আওয়ামী লীগ ঘরোনার নেতা কর্মীদের একটিই কথা দলের লোক কলা গাছ হলেও ভালো। তাছাড়া লাঙ্গলের প্রার্থীর সাথে মাঠের কর্মীদের কোন যোগাযোগ নেই বলেও তারা জানান। লাঙ্গলের প্রার্থী ভোটারদের সাথে যোগাযোগ না রেখে আওয়ামী লীগের শীর্ষ স্থানীয় নেতাদের সাথেই শুধু যোগাযোগ রাখছে বলে জানা যায়। ব্যাপারটিও তৃণমূল ভালোভাবে নেয়নি। সব মিলিয়ে দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনে ফেনী-৩ আসনের আজকের দিন পর্যন্ত নির্বাচনের যে হিসেব, সেই হিসেবে এই আসনে ১০% এর বেশি ভোটার কেন্দ্রে যাওয়ার সম্ভাবনা নেই। সব হিসেবে এ আসন থেকে জোটের প্রার্থী নির্বাচিত হওয়ার সম্ভাবনা ও অনেক কম। শেষমেষ জেলা আওয়ামী লীগ যদি কোন কারিশমা দেখাতে পারে তাহলেই জয়ী হয়ে আসতে পারবেন লাঙ্গল।