নিজস্ব প্রতিবেদক
বিএনপির ডাকা ৪৮ঘন্টা হরতালের প্রথম দিনে ফেনীতে বাস ও কাভার্ডভ্যানে আগুন দেয়ার ঘটনা ঘটেছে। রবিবার রাতে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের ফেনীর মহিপাল টার্মিনালে দাঁড়িয়ে থাকা একটি বাসে আগুন দিয়েছে দুর্বৃত্তরা। খবর পেয়ে ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা এসে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে সক্ষম হয়। রোববার রাত ৮ টার দিকে মহিপালের টার্মিনাল সামনে এলাকায় ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে দাঁড়িয়ে থাকা সুগন্ধা পরিবহনে আগুন দেয়ার ঘটনা ঘটে। সুগন্ধা পরিবহন ফেনী-নোয়াখালী ও সোনাপুর সড়কে চলাচল করে। ক্ষতিগ্রস্ত গাড়িটির নম্বর ঢাকা মেট্রো-ব ১১-৫০৮৫।
বাসের মালিক মিন্টু মিয়া জানান, তিনি ওই রুটের একজন লাইনম্যান। তার গাড়িটি মহিপাল টার্মিনাল এলাকায় ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে দাঁড়িয়ে থাকা অবস্থায় কে বা কারা আগুন ধরিয়ে দেয়। এতে সম্পূর্ণ গাড়িটির ভেতরের অংশ আগুনে পুড়ে ছাই হয়ে গেছে। শুধুমাত্র গাড়ির খাঁচা আছে। গাড়ির চালক দাউদ বলেন, গাড়ির কিছু মেরামত শেষে সে হোটেলে গিয়েছিলো রাতের খাবার খাওয়ার জন্য। তখনি এ ঘটনা ঘটে।
এদিকে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের ফেনী শহরতলীর লালপুল এলাকায় মালবাহী একটি কাভার্ডভ্যানে আগুন দিয়েছে দুর্বৃত্তরা। হরতাল শুরুর আগে শনিবার দিবাগত রাত ২টার দিকে মহাসড়কের লালপুলে কাভার্ডভ্যানটিতে আগুন দেয়া হয়। এসময় লালপুল এলাকাসহ তার আশপাশ এলাকায় বেশ কয়েকটি ফটকা বা ককটেল বিস্ফোরণর ঘটনা ঘটে।
কাভার্ডভ্যান চালকের সহযোগী সেলিম বলেন তারা চট্টগ্রাম থেকে এ পথ দিয়ে যাচ্ছিলো। তারা দূর থেকে দেখতে পায় মহাসড়কে কোন কিছুর মধ্যে আগুন জ¦লছে। এসময় তারা ও অন্যান্য গাড়িগুলো ব্রেক করে। তাদের গাড়িটা একটু গ্যাপে ছিলো। এসময় পাশের জমিন থেকে কিছু ছেলে পেট্রোলের বোতল গাড়িতে ছুঁড়ে মারে। এসময় পুরো গাড়িতে পেট্রোল ছিটে আগুন জ¦লতে থাকে। হামলাকারীরা কিরিচ হাতে নিয়ে মহাসড়কের বাম পাশ থেকে ডান পাশে চলে এসেছে। আমরা কোন রকম গাড়ির লক খুলে নেমে যাই। আমি একদিকে ও আমার ওস্তাদ একদিকে দৌঁড়ে পালিয়ে যাই।
ফেনী ফায়ার সার্ভিস স্টেশনের সিনিয়র স্টেশন কর্মকর্তা আবদুল মজিদ জানান, লালপোল রাত ১টা ৪০ মিনিটে আগুন দেয়ার ঘটান ঘটে। খবর পেয়ে ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা দ্রুত ঘটনাস্থলে গিয়ে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনেন। ‘ডায়মন্ড কার্গো সার্ভিস’ নামের একটি প্রতিষ্ঠানের পরিবহন এই কাভার্ডভ্যানটি। কাভার্ডভ্যানটি চট্টগ্রাম থেকে কার্টুন ভর্তি মালামাল নিয়ে ছেড়ে এসেছিল। মহিপালে রবিবার রাত ৮টার দিকে দাঁড়িয়ে থাকা একটি বাসে আগুন দেয়া হয়। পরে ফায়ার সার্ভিসের দুইটি ইউনিট ঘটনাস্থলে এসে আগুন নেভায়।
এদিকে মহিপাল ঘটনার পর তাৎক্ষনিক ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) থোয়াই অং প্রু মারমা, ফেনী মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. শহিদুল ইসলাম চৌধুরী।
ফেনী মডেল থানার ওসি মো. শহিদুল ইসলাম চৌধুরী বলেন, খবর পেয়ে পুলিশ শনিবার রাতেই ঘটনাস্থল থেকে কাভার্ডভ্যানটি উদ্ধার করে পুলিশ হেফাজতে নিয়ে আসে। এ ঘটনায় মামলার প্রস্তুতি চলছে।
ফেনীর পুলিশ সুপার জাকির হাসান বলেন, অবরোধে নাশকতা এড়াতে সড়ক-মহাসড়কে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী দায়িত্ব পালন করছে।
২৪ ঘন্টার মধ্যে ২টি পরিবহনে আগুন দেয়ার ঘটনায় শহরবাসীর মধ্যে আতঙ্ক বিরাজ করছে।