কোম্পানীগঞ্জ (নোয়াখালী) প্রতিনিধিঃ
নোয়াখালীর কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার বসুরহাট পৌরসভা থেকে মারজাহান আক্তার রিক্তা (২১) নামের এক গৃহবধূর মৃতদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। এসময় নিহত গৃহবধূর ব্যবহৃত মোবাইল থেকে একটি ভিডিও জব্দ করেছে পুলিশ, যাতে স্বামী ও শ্বাশুড়ীর নির্যাতনে নিরুপায় হয়ে সে আত্মহত্যা করেছে বলে জানিয়ে ছিলো।
শুক্রবার বিকেলে বসুরহাট পৌরসভার ৭নং ওয়ার্ডের ওয়াজ উদ্দিন ব্যাপারী বাড়ি থেকে পুলিশ ওই গৃহবধূর মৃতদেহ উদ্ধার করে। এর আগে বেলা ১১টার দিকে নিজ কক্ষের আড়ির সাথে ওড়না দিয়ে আত্মহত্যা করে সে।
নিহত গৃহবধু মারজাহান আক্তার রিক্তা বসুরহাট পৌরসভা ৭নং ওয়ার্ডের ওয়াজ উদ্দিন ব্যাপারী বাড়ির আবু নাছেরের মেয়ে এবং লক্ষ্মীপুর সদর উপজেলার চন্দ্রগঞ্জ এলাকার দক্ষিণ লতিফপুর গ্রামের ফয়সালের স্ত্রী। তাদের সংসারে এক বছরের একটি ছেলে সন্তান রয়েছে।
স্থানীয়রা জানান, প্রায় দু’বছর আগে লক্ষ্মীপুর জেলার দক্ষিণ লতিফপুর গ্রামের ফয়সালের সাথে রিক্তার প্রেমের সম্পর্কে বিয়ে হয়। বিয়ের পর থেকেই স্বামী’সহ পরিবারের সদস্যরা তাকে শারীরিকভাবে নির্যাতন করতো। রিক্তা পুন:রায় তার স্বামী, শ্বাশুড়ী ও নানী শ্বাশুড়ী শারীরিক নির্যাতনে শিকার হয়ে বাবার বাড়ি কোম্পানীগঞ্জে চলে আসে। শুক্রবার সকালে তার মোবাইল ফোনে একটি ভিডিও রেকর্ড করে সে গলায় ফাঁস দেয়। পরে পরিবারের লোকজন বিষয়টি টের পেয়ে তাকে উদ্ধার করে কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিলে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত বলে ঘোষনা করেন।
মোবাইলের ওই ভিডিও’তে রিক্তা জানান, তার স্বামী, শাশুড়ী ও নানী শ্বাশুড়ী তাকে শারীরিক এবং মানুসিক ভাবে নির্যাতন করতেন। তাই সে নিরুপায় হয়ে আত্মহত্যা করছেন। এসময় তার ছেলেকে সবাই দেখে রাখার শেষ অনুরোধ জানান রিক্তা।
নিহত গৃহবধূর পিতা আবু নাছের বলেন, আমি বিদেশ থাকাকালীন রিক্তা প্রেম করে বিয়ে করে। বিয়ের পর থেকে তার স্বামী ও শাশুড়ী প্রায়সময় তাকে শারীরিকভাবে নির্যাতন করতো। স্বামী, শাশুড়ী ও ননদ সহ তার শ্বশুরের পরিবারের লোকজনের নির্যাতন সহ্য করতে না পেরে সে আজ দুপুরে নিজ ঘরে গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করে। আমার নাতি কান্না করলে আমি ঘরের দরজার বাইরে দাঁড়িয়ে প্রথমে রিক্তা বলে ডাকাডাকি করার পর কোন সাঁড়া শব্দ না পেয়ে পরে দরজা খুলে তাকে ঝুলন্ত অবস্থায় দেখতে পাই। আমার মেয়েকে আত্মহত্যা করতে যারা বাধ্য করেছে আমি তার সুষ্ঠু বিচার দাবি করছি।
কোম্পানীগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) প্রণব চৌধুরী ভিডিও’র সত্যতা স্বীকার করে বলেন, ভিডিও’টি আমরা উদ্ধার করেছি। মৃতদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে।