দাগনভূঞা প্রতিনিধি
দাগনভূঞা ৩ নম্বর পূর্বচন্দ্রপুর ইউনিয়ন আমুভূঞা হাট হাছানিয়া দাখিল মাদরাসায় আয়া পদে অনিয়মের অভিযোগ পাওয়া গেছে। এব্যাপারে দাগনভূঞা উপজেলা নির্বাহী অফিসার বরাবর গত ১০ অক্টোবর অভিযোগ দায়ের করেছেন মারজান আক্তার নামে একজন পরীক্ষার্থী। অভিযোগের ভিত্তিতে দাগনভূঞা সমাজসেবা কর্মকর্তা আইনুল হোসাইন জিলানীকে প্রধান করে তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়।
অভিযোগকারী মারজান আক্তার বলেন, আমার পিতা আব্দুল খালেক এই মাদ্রাসায় দপ্তরি পদে চাকরি করে অবসর গ্রহণ করেন। এর পর আমি মাদরাসায় প্রায় ২ বছর চাকরি করেছি। গত ৬ অক্টোবর শুক্রবার দাগনভূঞার উপজেলাধীন আমু ভূঞারহাট হাছানিয়া দাখিল মাদ্রাসায় আয়া পদে নিয়োগ পরীক্ষায় আমরা পাঁচজন অংশগ্রহন করি। নিয়োগ পরিক্ষার হলে নিয়োগ কমিটির সদস্য ফয়েজ আহাম্মদ মিঞা আয়া পদের প্রার্থী নিলুফা আক্তারের নিয়োগ নিয়োগ পরীক্ষার খাতা সম্পূর্ণ লিখে দেন ও তাকে প্রথম স্থান ঘোষনা করেন। পরীক্ষায় তাকে দ্বিতীয় ঘোষনা করা হয়েছে বলে তিনি জানান।
জানা যায়, ফয়েজ আহম্মদ মিয়া মাদ্রাসা কমিটির প্রতিষ্ঠাতা সদস্য ও কমিটির সভাপতি জামাল উদ্দিন ছুট্টুু মিঞার শ্যালক। মরিয়ম অভিযোগ করেন, মাদ্রাসার সভাপতি হলে উপস্থিত ছিলেন। ডিজির প্রতিনিধি মো. আবদুল মান্নান পরীক্ষার্থীদের খাতায় স্বাক্ষর না করে ফয়েজ আহাম্মকে দিয়ে খাতায় স্বাক্ষর করিয়েছেন। ডিজির প্রতিনিধি পরীক্ষার হলের ভিতরে বাইরে বারবার যাতায়াত করে লেখা দেয়ার ঘটনাটি না দেখার ভান করেছেন। পরবর্তীতে চাক্ষুশ দেখার পরও কোনো প্রতিকার করেন নাই। অভিযোগে জানা যায়, নিয়োগ পরীক্ষা চলাকালীন সময় উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা আজিজুল হক একবারও হলে আসেন নাই। মাদ্রাসার সুপার বেলাল হোসাইন পরীক্ষা শুরুর প্রথমে একবার এসে পরীক্ষা চলাকালীন সময় একবার উঁকি মেরে চলে যান। মরিয়ম জানান, মৌখিক পরীক্ষার শেষ দিকে প্রার্থীগন এর প্রতিবাদ করিলে নিয়োগ কমিটি জুমার নামাজের অজুহাতে তড়িঘড়ি করে চলে যান।
মরিয়ম তার অভিযোগে আরো জানান, এই নিয়োগ পরীক্ষার চরম জালিয়াতির বাস্তব প্রমান হলো এই একই মাদ্রাসায় গত ২৪ শে মার্চ তারিখে অন্যান্য পদের সাথে আয়া পদেও নিয়োগ পরিক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। তখন ০৩(তিন) জন প্রার্থীর মাঝে আমি প্রথম হই। ৬ ই অক্টোবর তারিখে প্রথম হওয়া প্রার্থী নিলুফা আক্তার সে পরীক্ষায় এক নাম্বারও পায় নাই। বর্তমানে সে কি করে লিখিত পরিক্ষায় ১৭ নাম্বার পেয়ে প্রথম হয়। নিয়োগ নীতিমালা অনুযায়ী ০৩(তিন) জন প্রার্থী পাশ নাম্বার না পাওয়ায় তখন আমাকে নিয়োগ দেওয়া হয় নাই। উক্ত ২৪ শে মার্চ তারিখে নিয়োগ পরীক্ষায় যাবতীয় খাতা পত্র অবশ্যই মাদ্রাসায় রক্ষিত রয়েছে। যাহা সুষ্ঠু তদন্তে বের হবে।
নিয়োগ কমিটির সদস্য ফয়েজ মিয়ার সাথে ফোনে কথা বললে তিনি বলেন, আমার বিরুদ্ধে অভিযোগ মিথ্যা। পরিক্ষার হলে সরকারি লোক থাকতে আমি কিভাবে খাতা লিখে এনে দিব। আর এই অভিযোগ পরীক্ষার হলে করে নেই কেন?
মাদরাসার সভাপতি জামাল উদ্দিন ছুট্ট মিয়ার মোবাইলে ফোন দিলে তিনি ফোন রিসিভ করেননি। মাদরাসার সুপার বেলাল হোসাইন বলেন, আমি পরীক্ষা কেন্দ্রে প্রথমে গেলেও এর পরে উপস্থিত ছিলাম না। আমি সভাপতির সাথে তখন মাদরাসার ব্যাপারে কথা বলছিলাম। পরীক্ষার হলে কী হয়েছে আমার জানা নেই।
মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার আজিজুল হক বলেন, এটি যেহেতু তদন্তাধীন। তাই এব্যাপারে আমি কোন কথা বলবনা। এটি তদন্ত কর্মকর্তা বলতে পারবেন।
দাগনভূঞা নির্বাহী অফিসার নিবেদিতা চাকমার বলেন, অভিযোগ পেয়েছি তদন্ত চলছে। তদন্ত রিপোর্ট পাওয়ার পর প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।