১২ই ফেব্রুয়ারি, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ | ২৯শে মাঘ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ |
  • প্রচ্ছদ
  • টপ নিউজ >> দেশজুড়ে >> মতামত
  • সুদ মুক্ত অর্থনীতিতে বিশ্ব শান্তি
  • সুদ ত্যাগের উপায়

    সুদ মুক্ত অর্থনীতিতে বিশ্ব শান্তি

    দৈনিক আমার ফেনী

    মো. আবুল বাশার চৌধুরী
    সুদের যত কুফল, ক্ষতি, অকল্যান, ধ্বংস, অশান্তি, অভিশাপ থেকে সুরক্ষা পেতে সুদ মুক্তির জন্য মানুষের করণীয় কাজ হবে নিম্নরূপঃ
    * প্রত্যেক দেশের সরকার এবং ঋণদাতা-সুদ গ্রহীতা ও ঋনগ্রহীতা-সুদ দাতা গন আন্তরিকতার সাথে এই মর্মে এগিয়ে আসতে হবে। দীর্ঘ মেয়াদী পরিকল্পনা নিয়ে ক্রমান্বয়ে সুদের অংক/হার কমাতে কমাতে (০) শূন্যের কোটায় নিয়ে আসতে হবে এবং এর জন্য প্রয়োজনীয় তহবিল গঠন করতে হবে।
    * সুদ নির্ভর জীবিকা অর্জনকারী বিশেষ করে ঐসব মানুষ যারা কর্মজীবন শেষে অবসর জীবন যাপনে যায়-দীর্ঘ মেয়াদী পরিকল্পনা নিয়ে তাদের জন্য সুদ বিহীন জীবন জীবিকার ব্যবস্থা করা বা বিকল্প কোন ব্যবস্থা করা।
    * সুদ আয় বাদ দিয়ে ব্যক্তি, প্রতিষ্ঠানের অন্যান্য আয়, ব্যয়ে স্থান তৈরী করে নিতে হবে। সুদের প্রয়োজন হয় না এমন অনেক পেশা আছে। যেমন-উৎপাদন, ব্যবসা-বানিজ্যের লাভ/ক্ষতি, বেতন, মজুরী, পেনশন/এসবের নানা সুবিধাদি। যাদের সুদের প্রয়োজন হয় না/ ব্যবস্থা নেই সুদ নির্ভরদের তাদের মত ব্যবস্থা করে দেয়া।
    * প্রয়োজনে কর বাড়ানো/ কমানো যেতে পারে। বার্ধক্য ভাতা, বেকার ভাতার প্রচলন করতে হবে।
    * মানব কল্যানে যেখানে সুদ দিতে হয়/ সুদের বিকল্প নেই সেখানে সুদকে লাভে পরিণত করে দিতে হবে।
    * মানব সম্পদের পূর্ন ব্যবহার নিশ্চিৎ করতে হবে।
    * পেশা, কর্ম, মানবসম্পদ, শিক্ষা-দীক্ষা, জ্ঞান, বিজ্ঞান, সম্পদ ইত্যাদির অপব্যবহার ও অপচয় রোধ করতে হবে। এসবের চাহিদা, প্রয়োজনানুযায়ী ও কর্মোযোগী যোগানের ব্যবস্থা করতে হবে।
    * মানুষের ব্যক্তি, প্রতিষ্ঠানের ব্যবসায়িক, অব্যবসায়িক লেনদেন নগদে ও বাকিতে/ ধারে (সুদ ছাড়া) সংঘটিত হয়। যেখানে সুদ ছাড়া বাকিতে/ ধারে ব্যবসায়ের বেচা-কেনা, কাজ-কারবার ব্যক্তিগত নানা লেনদেন সংঘটিত হতে পারে, সেখানে সুদ ছাড়া ঋণের ব্যবস্থাও থাকতে পারে। কাজেই সুদ মুক্ত ঋন চালু/ ব্যবহার করা ও সুদ বিহীন ব্যবসা বানিজ্যের ব্যবস্থা করা যেতেই পারে।
    * দেশে বিদেশে মানুষের নানা দুর্যোগ, আর্থিক সংকট, অভাব অনটন, মানবিক বিবেচনায় সুদ মুক্ত ঋণ দানের বহু নজির আছে। সুতরাং মানুষের যে কোন প্রয়োজনে সর্ব ক্ষেত্রে সুদমুক্ত ঋণ দান সম্ভব। আর সুদ মুক্ত ঋণের দ্বারা ঋনের উদ্দেশ্য অধিক সফল ও ফলপ্রসূ হবে।
    * সুদ পরিহার করে শরীয়া ব্যাংকিং চালু করা। ইসলামি ব্যাংকিং বলতে ইসলামী শরিয়ত মোতাবেক আর্থিক ব্যবস্থার উপর নির্ভর করে গড়ে উঠা ব্যাংক ব্যবস্থাকে বুঝায়। ইসলামি ব্যাংক দুটি মূলনীতির উপর প্রতিষ্ঠিত; যথাঃ লাভ ও লোকসানের ভাগ নেওয়া এবং সুদ লেনদেন নিষিদ্ধ।
    * পতিত/ অব্যবহিৃত সম্পদের ব্যবহার করতে হবে।
    * মানুষের চাহিদা, প্রয়োজনানুযায়ী দ্রব্য-সামগ্রী ও সেবার উপযোগী শিল্প, কারখানা, ব্যবসা বানিজ্য প্রতিষ্ঠা করা। তাতে চাহিদা, যোগানের ভারসাম্য রক্ষাসহ সেবা, উৎপাদন, কর্ম সংস্থান হবে এবং উদ্দেশ্য সফল হবে।
    * প্রত্যেক মানুষকে তার ধর্ম, কর্ম, দায়-দায়িত্ব, কর্তব্যের জন্য জবাব দিহিতার আওতায় নিয়ে আসতে হবে। তাতে সবাই কর্তব্যপরায়ন, দায়িত্বশীল হবে। যার ফলে মানুষের সুদের চিন্তা করার প্রয়োজন হবে না।
    * সুদের আয়-ব্যয়ের লাভের পরিবর্তে উৎপাদন ও সুদ ছাড়া/ ব্যবসায়িক আয়-ব্যয়ের লাভের ধারাতেই মানব কল্যান নিহিত। সুদের অবর্তমানে অনেক রকমের ব্যয় সাশ্রয় হবে ও অপচয় কমবে, মানুষের ধ্যান ধারনায় কর্মমুখী হবার পরিবর্তন আসবে; বর্ণিত ও নানাবিধ সুবিধার দ্বারা এবং অলস মানুষজন কর্মে নিয়োজিত হলে নিশ্চিৎ অর্থনীতির ব্যাপক উন্নয়ন ঘটবে।
    * প্রকৃতপক্ষে কি উদ্দেশ্যে, কেন ঋণের প্রয়োজন, গ্রাহকের সততা যাচাই- বাছাই পূর্বক সুদ মুক্ত ঋণ দিতে হবে/ নিতে হবে। অবশ্যই ঋণ সৎ উদ্দেশ্যে দেশ বিদেশের সর্বত্র গণমানুষ ও ব্যবসা বানিজ্যের কল্যান, ক্ষেত্র বিশেষে বিপদগ্রস্থ মানুষের জন্য মানবিক দিক বিবেচনায় রেখে ঋণ দান/ গ্রহন করতে হবে। তারপরও সঙ্গত কারনের কুঋণ মোকাবিলার জন্য নির্ভরযোগ্য কাউকে ঋন ঝুঁকি তহবিল সংরক্ষন করতে হবে। তাতে করে সুদের প্রয়োজনীয়তার বিলোপ সাধন হবে। কুঋণ ধারীদের অবশ্যই সত্যতা যাচাইয়ের ব্যবস্থা রাখতে হবে; যদি মবহঁরহব মৎড়ঁহফ হয় অবস্থা বুঝে নধফ ফবনঃ- ৎিরঃব ড়ভভ করতে হবে।
    * সুদের ক্ষতি, অপকার, অকল্যান আকাশ সমান। সুদ মানুষকে কাজ, কর্ম, পরিশ্রম করে উৎপাদন ও আয় উপার্জন করা থেকে বিরত করে দিয়ে অকর্মন্য, অলসতা, বিলাসিতা, আরাম প্রিয়তা, সংঘাত, যুদ্ধ, বিপদের দিকে ঠেলে দেয় এবং মন্দ কাজের দিকে ধাবিত করে দেয়; অর্থনীতির চাকা/ গতি মন্থর করছে। সুদ বিহীন ঋন ব্যবস্থায় এরকম সুযোগ থাকবে না, দরকার করবে না। তাই এমন কুফল থেকে রক্ষা পেতে মানুষকে স্ব ইচ্ছায় সুদ ত্যাগ করা আবশ্যক।
    * সুদের কুফল, ক্ষতি, অকল্যান, ধ্বংস, অশান্তি, অভিশাপ থেকে সুরক্ষা পেতে- সুদকে ঘৃনা প্রূবক আরো গবেষণা, পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে বিশ্বের সব দেশ মানব কল্যানে দীর্ঘ মেয়াদী পরিকল্পনা নিয়ে সুদ দেয়া নেয়া নিষিদ্ধ করে যথোপযুক্ত জেল জরিমানার ব্যবস্থা রেখে কঠোর আইন প্রণয়ন করতে হবে।
    লেখক: অবঃ ব্যাংকার।

    আরও পড়ুন

    মসজিদের মাইকে ঘোষণা দিয়ে বিএনপির দু’পক্ষের সংঘর্ষ
    ফুলগাজীতে গুড়িয়ে দেয়া হলো ইটভাটা, জরিমানা ৭ লাখ টাকা
    ফেনীতে আওয়ামী লীগ সংশ্লিষ্ট গ্রেপ্তার-৯
    গ্রামের বাড়ি হলো পতিতা পল্লী
    ক্রীড়া সংস্থার কমিটি বাতিলের দাবিতে অবস্থান কর্মসূচি
    জনসভাকে কেন্দ্র করে জেলা বিএনপির প্রস্তুতি সভা
    ফাজিলপুরে যুবদলের কমিটিকে স্বাগত জানিয়ে আনন্দ মিছিল
    চাঁদাবাজির অভিযোগে জামায়াতের জাকির বহিষ্কার