কামরুল আরেফিন
ফেনী পৌরসভার মেয়রের দায়িত্ব গত ২০২১ সালের ২৭ ফেব্রুয়ারী গ্রহণ করেন নজরুল ইসলাম স্বপন মিয়াজী। দায়িত্ব গ্রহণের পর থেকে অবহেলিত ফেনীকে আধুনিক ও উন্নত ফেনীতে রূপান্তর করতে অনেকটা ম্যাজিক ম্যানের ভূমিকায় অবতীর্ণ হন। অভূতপূর্ব উন্নয়ন করে ফেনী পৌর পিতা শহরের আবাল বৃদ্ধ বনিতা সবার হৃদয়ে ইতোমধ্যে স্থান করে নিতে সক্ষম হয়েছেন। কথা আর কাজের সমন্বয়, একাগ্রতা ও চিন্তাশীলতার সমন্বয়ের কারণে বাংলাদেশের অনেক বিভাগীয় জেলা শহরের তুলনায় ফেনী আজ দেখতে অনেক আধুনিক ও সুন্দর। ফেনীর নাগরিকরা ভোগ করছেন উন্নত ও পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন জীবন।
তরুণ প্রজন্মের কাছে আইডল স্বপন মিয়াজী করোনা মহামারির মত অবস্থায় তিনি মোটেই বিচলিত না হয়ে বরং পৌর এলাকাকে পরিচ্ছন্ন, নান্দনিক ও বাসযোগ্য শহরে রূপান্তর করার জন্য নিরলসভাবে ছুটে চলেছেন। মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছেন। মানবতার এই ফেরিওয়ালা কোটি কোটি টাকার বিভিন্ন উন্নয়ন প্রকল্প হাতে নিয়ে তার সুচারুভাবে সম্পন্ন করতে সক্ষম হয়েছেন।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, ১৯৫৮ সালে চারটি ওয়ার্ড নিয়ে ফেনী পৌরসভা গঠিত হয়। ২৭.২০ বর্গকিলোমিটার আয়তনের ফেনী পৌরসভা বর্তমানে রয়েছে ১৮টি ওয়ার্ড। বিগত দিনে ফেনী পৌরসভার মেয়র হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন বর্তমান সদর আসনের সংসদ সদস্য ও জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক নিজাম উদ্দিন হাজারী, হাজী আলাউদ্দিন, প্রয়াত কোবাদ আহাম্মদ ও নুরুল আবসার, মিয়া হাজারী, আবু বক্কর প্ররুখ।
গত পৌর নির্বাচনে নজরুল ইসলাম স্বপন মিয়াজী বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ কর্তৃক মনোনীত হয়ে বিপুল ভোটে বিজয়ী হওয়ার পরই শহরের উন্নয়ন চিত্রটা সম্পূর্ণ পাল্টাতে বিভিন্ন নান্দনিক ও যুগোপযোগী সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেন। সিদ্ধান্তকে বাস্তবে রূপ দিতে মেয়র সকল উন্নয়ন কর্মকা-ের তদারকি নিজেই করেছেন। ইতোমধ্যে ফেনীর ট্রাংক রোডে দৃষ্টিনন্দন ও চমৎকার নির্মাণশৈলী দিয়ে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার স্থাপন, শহরের রাস্তার ডিভাইডারের মাঝে গাছ রোপন ও পুরো শহরে লাইট দিয়ে সুসজ্জিত, শহরের সৌন্দর্যবর্ধনের কাজ, নান্দনিক ডিজাইনের দোয়েল চত্বর নির্মাণ, আল্লাহু লেখা সংবলিত ওয়াচ টাওয়ার স্থাপন ও ঐতিহাসিক রাজাঝির দীঘির পাড়ে ফোয়ারা স্থাপনসহ নানামুখী অসংখ্য কাজ হাতে নিয়ে তা বাস্তবায়ন করেছেন। পৌরসভার পরিচ্ছন্নতা কর্মীর সাথে অতিরিক্ত জনবল দিয়ে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা কার্যক্রম চালানো হচ্ছে। বর্তমান বর্জ্য ব্যবস্থাপনায়ও আধুনিকতার ছোঁয়া লেগেছে। প্রতিদিন সূর্য ওঠার আগেই শহরের বর্জ্য অপসারণ করা হচ্ছে। এ ছাড়াও তিনি শহরের যানজট নিরসনকল্পে অবৈধ উপায়ে গড়ে উঠা ফুটপাতগুলোকে দখলমুক্ত করা ও ভাসমান ফেরীওয়ালাদের পরিচালিত ব্যবসা প্রতিষ্ঠানসমূহকে উচ্ছেদসহ নানাবিদ পদক্ষেপ গ্রহণ ও বাস্তবায়ন করেছেন। এদিকে পৌরবাসীর সেবায় ‘মেয়র ফেনী পৌরসভা’ নামের একটি মোবাইল অ্যাপ উদ্বোধন করেছেন যা ডিজিটাল বাংলাদেশ বিনির্মাণের অন্যতম সহায়ক। এ অ্যাপটির মাধ্যমে পৌর মেয়রের সাক্ষাৎকার, নাগরিকদের যেকোনো ধরনের অভিযোগ, তথ্য প্রদান, কর্মকর্তাদের তথ্য, মেয়রের বার্তা, পৌরসভা সম্পর্কে ধারণা ও ২৪ ঘণ্টা নাগরিকসেবা চালু রয়েছে। এ ছাড়াও অপরাধরোধে শহরের গুরুত্বপূর্ণ স্থানে উচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন সিসি ক্যামেরা স্থাপনের প্রকল্প হাতে নিয়ে তা বাস্তবায়ন করেছেন। এ ছাড়া যানজট নিরসনে নগর সিএনজি সেবা চালু করায় নগরবাসী এর সুফল পেতে শুরু করেছে।
ফেনীকে দুর্নীতিমুক্ত ও একটি মডেল শহর হিসেবে গড়তে তার ছুটে চলা নিরন্তর। মাদক, ইভটিজিং ও কিশোর গ্যাং কালচারের সাথে কোমলমতি শিক্ষার্থীরা যেন জড়িয়ে না পড়ে সে জন্য অগ্রাধিকার ভিত্তিতে গুরুত্ব দিয়ে মেয়র বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ করেন। শহরের পুরাতন জেল রোডে বিশাল এক পর্দা স্থাপন, নিজে উপস্থিত থেকে সাধারণ জনগণের সাথে খেলা উপভোগ করা, বিভিন্ন টুর্নামেন্টের পরিচালনা, আয়োজন ও খেলাধুলার সাথে সম্পৃক্ত করতে পৌর মেয়র বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ করার কারণে তিনি পৌর জনগণের কাছ থেকে আস্থা কুড়িয়েছেন। প্রতিনিয়ত পৌরপিতা মেধাবী শিক্ষার্থীদের পড়ালেখার ব্যয় নির্বাহ করা, শহরের অবকাঠামোগত উন্নয়ন, তড়িৎ গতিতে পৌরবাসীর মাঝে নাগরিক সেবা প্রদান, মসজিদ-মন্দিরের ব্যাপক উন্নয়ন, অসহায় গরিব ও এতিমদের পাশে দাঁড়িয়েছেন।
শহরের শহীদ শহীদুল্লা কায়সার সড়কের বাসিন্দা জহির উদ্দিন বলেন, আগে বর্ষকালে এ সড়কে পানি উঠতোই। এবছর বর্ষায় সড়কে কোন পানি জমে থাকেনি। ভারী বৃষ্টির কিছুক্ষনের মধ্যেই পানি সড়ক থেকে পানি নেমে গেছে। বর্ষার আগে খাল ও ড্রেনগুলো পরিষ্কার করায় আমরা তার সুফল পেয়েছি।
ফেনী পৌরসভার ১৩ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা তৌহিদুর রহমান হানিফ বলেন, অতীতের সকল রেকর্ড ভেঙে বর্তমান পৌর পিতা আমাদের ওয়ার্ডে অভূতপূর্ব উন্নয়ন করেছেন। আগামীতে তিনি আবার মেয়র নির্বাচিত হলে সত্যিই ফেনী আরো আধুনিক শহর হয়ে উঠবে।
ফেনী পৌরসভার ৮নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর সাইফ উদ্দিন রুপম বলেন, গত ৪ মাস পূর্বে আমি ৮নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর নির্বাচিত হই। কাউন্সিলর হওয়ার পর থেকে মেয়র মহোদয় আমার ওয়ার্ডে রাস্তা, ঘাট, কালভার্টসহ বিভিন্ন উন্নয়ন করে যাচ্ছেন। ফেনী পৌরসভার ১নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা রফিকুল ইসলাম ভূঁইয়া বলেন, বিগত দিনে যখন ফেনী জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও ফেনী সদর আসনের সংসদ সদস্য নিজাম উদ্দিন হাজারী মহোদয় পৌর মেয়র ছিলেন উনার হাতধরে পৌরসভায় ব্যাপক উন্নয়ন সাধিত হয়েছে। সেই ধারাবাহিকতায় বর্তমান মেয়র প্রত্যেকটি ওয়ার্ডের ন্যায় আমার ১ নম্বর ওয়ার্ডেও ব্যাপক উন্নয়ন করেছেন। পৌরসভার ২নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর লুৎফুর রহমান খোকন হাজারী বলেন, বিগত দিনের ফেনী পৌরপিতা, ফেনী জেলা গণমানুষের নেতা ও সদর আসনের সংসদ সদস্য নিজাম উদ্দিন হাজারী মহোদয়ের পরে বর্তমান পৌরপিতা পৌরসভার সকল ওয়ার্ডে ব্যাপক উন্নয়ন ও নান্দনিক ফেনী পৌরসভা গড়তে অক্লান্ত পরিশ্রম করে যাচ্ছেন। যা সত্যিই প্রশংসনীয় ও বিরল।
আগামী দিনে নান্দনিক ও আধুনিক ফেনী গড়তে ফেনী পৌর মেয়র ও ফেনী পৌর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক নজরুল ইসলাম স্বপন মিয়াজি দৈনিক আমার ফেনী’কে জানান ফেনীকে বাংলাদেশের মধ্যে একটি আধুনিক জেলা শহর হিসেবে গড়তে যেখানে যা করার প্রয়োজন তা আমি করবো। ফেনী সমন্ধে বিগত দিনে মানুষের মাঝে যে খারাপ ধারনা ছিল সে ধারনাকে পাল্টানোর জন্য আমি কাজ করে যাচ্ছি। ফেনী শহরের উন্নয়নের বিষয়ে কাজ করে যাচ্ছি আগামীতে আধুনিক ফেনী গড়ার লক্ষ্যে আরো বেশি মনোনিবেশ করবেন বলে তিনি জানান।
পৌর জনগনের পাশে থেকে উন্নয়নের ধারা মেয়র অব্যাহত রাখবেন ও ফেনী বাসীর প্রাণের দাবি ফেনীতে একটি সরকারি মেডিকেল কলেজ ও পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপনকল্পে তিনি চেষ্টা চালাবেন এমন আশায় বুক বেঁধেছে ফেনীবাসী।