মো. ওমর ফারুক
ফেনীতে বর্ষামৌসুমে গ্রামীণ কাঁচা সড়কগুলো খানাখন্দ, গর্ত ও কর্দমাক্ত হওয়ায় চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। এসব রাস্তায় ছোট-বড় গাড়ি ও জনসাধারণের চলাচলে চরম দুর্ভোগ পোহাতে হয়, দেখার যেন কেউ নেই। সরেজমিনে দেখা যায়, সদর উপজেলার কালিদহ ইউনিয়নের ৩নম্বর ওয়ার্ড যাত্রাসিদ্দি গ্রামে মুক্তিযোদ্ধা রসুল আহাম্মেদের নামের কাঁচা সড়ককটির বেহাল অবস্থা। বর্ষায় পুরো রাস্তা কর্দমাক্ত থাকে, দেখে মনে হবে যেন ধানের চারা রোপনের জন্য হাল চাষ করা হয়েছে। জনবসতিপূর্ণ এলাকায় গুরুত্বপূর্ণ রাস্তাটি খানাখন্দে ও গর্তে চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। কোনো গাড়ি এ রাস্তায় এখন আর চলাচল করে না।
প্রতিনিয়তই চরম দুর্ভোগের শিকার হচ্ছেন স্থানীয় জনসাধারণ, স্কুল-কলেজের ছাত্রছাত্রী, অসুস্থ রোগী ও মুরগীর খামারীরা। ঢাকা-চট্রগ্রাম মহাসড়কের সাথে মুক্তিযোদ্ধার নামে সংযোগ সড়ক থাকলেও এ রাস্তায় এখনো কোনো উন্নয়নের ছোঁয়া লাগেনি। এতে করে স্থানীয় জনসাধারণের মাঝে সৃষ্টি হয়েছে মিশ্র প্রতিক্রিয়া। স্থানীয় নুর আহাম্মদ, একরামুল হক,বেলাল,আবদুল্লাহ ও সিরাজ বলেন, আমরা যাত্রাসিদ্দি ৩ন্মবর ওয়ার্ডের বাসিন্দা। আমাদের এ এলাকায় ২শ পরিবারের প্রায় ১৫ হাজার লোকের বসবাস। কিন্তু দীর্ঘ ৩০ বছর যাবত এই কাঁচা রাস্তা দিয়ে আমাদেরকে চলাচল করতে হয়। পুরো বর্ষায় কাদামাটি মাডিয়ে রাস্তা দিয়ে চলাচল করা আমাদের জন্য চরম কষ্টের। পানি নিস্কাষন ব্যবস্থা না থাকায় বৃষ্টি হলে রাস্তা পানির নিচে ডুবে থাকে,পানি সরে গেলে রাস্তা কাদা হয়ে যায়। ছেলে মেয়েরা স্কুল কলেজে যেতে কষ্ট হয়, অসুস্থ রোগীকে হাসপাতালে নিতে হলে কোলে করে নিতে হয়, কারন কোনো গাড়ি এ রাস্তায় ঢুকতে চায় না। সামাজিক অনুষ্ঠানাদী করা যায় না। সীমাহীন কষ্টে আছি আমরা। এ বেহাল রাস্তার বিষয়ে অনেকবার চেয়ারম্যান, মেম্বারদেরকে কাছে অভিযোগ দিয়েছি কিন্তু কোনো কাজ হয়নি। আমাদের এলাকার কাঁচা রাস্তাটি পাকাকরনের জন্য সদর আসনের এমপি নিজাম উদ্দিন হাজারী ও অত্র ইউনিয়নের চেয়ারম্যানের কাছে আকুল আবেদন জানাই।
এদিকে সচেতন মহল মনে করছেন,কৃষি নির্ভর গ্রামীণ রাস্তা গুলোর বিষয়ে স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের আন্তরিক প্রচেষ্টা না থাকায় আজ জনগণ সরকারের উন্নয়ন কর্মকান্ড থেকে বঞ্চিত রয়েছে,সুফল ভোগ করতে পারছে না। সরকার উন্নয়নে বিশ্বাসী। সারা বাংলাদেশের আনাচে কানাচে সরকারের উন্নয়ন কাজের অগ্রগতি দৃশ্যমান। তারা এ বিষয়ে জনপ্রতিনিধি ও উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে আন্তরিক হওয়ার আহবান জানান।
ফেনী রিপোর্টার্স ইউনিটির সভাপতি বাবু শুকদেব নাথ তপন বলেন, রাস্তাটি জনবহুল এলাকায় অবস্থিত। এখানে রয়েছে স্কুল-মাদ্রাসা,মসজিদ ও মন্দির ও হিন্দুদের শ্বশাণ। কিন্তু কাঁচা রাস্তার কারণে বর্ষায় চলাচল করা খুবই কষ্টসাধ্য হয়ে পড়েছে। আমি চাই মুক্তিযোদ্ধা রসুল আহাম্মদের প্রতি সম্মান রেখে, জনগণের কথা চিন্তা করে কাঁচা রাস্তাটি পাকাকরণের উদ্যোগ গ্রহণ করবেন সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ।
স্থানীয় ইউপি সদস্য নাছির উদ্দিন মিন্টু বলেন, আমার ওয়ার্ডে মুক্তিযোদ্ধা রসুল আহাম্মদ,নুর নবী ও মাস্টার আবুল হাশেম এর নামে তিনটি কাঁচা রাস্তার অবস্থা খুবই খারাপ। বৃষ্টি হলে এসব রাস্তায় কাদাপানিতে একাকার হয়ে যায়। জনসাধারণ ও গাড়ি চালকদেরকে সীমাহীন কষ্ট করতে হয়। আমি ওয়ার্ডবাসীর পক্ষ থেকে রাস্তাগুলো পাকাকরণের উদ্যোগ গ্রহণ করতে স্থানীয় চেয়ারম্যান,এমপি মহোদয় ও স্থানীয় সরকার প্রকৌশল বিভাগের সু-দৃষ্টি কামনা করছি।
এ বিষয়ে কালিদহ ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান দেলোয়ার হোসেন ডালিম বলেন,আমার ইউনিয়নে ২২টি কাঁচা রাস্তা রয়েছে। এসব রাস্তাগুলো চিহ্নিত করে নতুন আইডিতে অর্ন্তভুক্তির জন্য আমার পরিষদের পক্ষ থেকে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরে আবেদন জমা দিয়েছি। আশা করছি খুব সহসায় এসব রাস্তা পাকা করণের কাজ শুরু হবে।