চৌদ্দগ্রাম(কুমিল্লা)প্রতিনিধি :
কুমিল্লার চৌদ্দগ্রামে মাদক ব্যবসায়ীর বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ানোর কারণে দফায় দফায় সংঘর্ষ, গুলি বর্ষণ ও অগ্নিসংযোগের ঘটনায় দুইজন গুলিবিদ্ধসহ ১০-১২ জন আহত হয়েছে। সংঘর্ষে শতাধিক বাড়িঘর, দোকানপাট ভাংচুর-লুটপাট ও ৩টি খড়ের গাদায় অগ্নিসংযোগের ঘটনায় এলাকায় আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। শনিবার রাতে পৌর এলাকার রামরায়গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। গুলিবিদ্ধরা হলেন; গোমারবাড়ি গ্রামের বশিরের ছেলে আবদুল আহাদ(২০), রামরায় গ্রামের হিরণ কবিরাজের ছেলে সালমান(২০), ধারালো অস্ত্রের আঘাতে গুরুতর আহত রামরায় গ্রামের মৃত লাল মিয়ার ছেলে হিরণ কবিরাজ(৫০)। আশংকা জনক অবস্থায় তিন জনকে কুমিল্লা থেকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়েছে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, শনিবার সন্ধ্যায় গোমারবাড়ি গ্রামের বশিরের ছেলে আবদুল আহাদ চৌদ্দগ্রাম বাজারস্থ এমপি কার্যালয়ের সামনে গেলে বৈদ্দেরখীল গ্রামের আবদুল বারেকের ছেলে চিহ্নিত মাদক ব্যবসায়ী ও চাঁদাবাজ সোহেলের নেতৃত্বে অজ্ঞাতনামা সন্ত্রাসীরা তাকে তুলে চৌদ্দগ্রাম মহিলা মাদরাসার পিছনে ঈদগাহ মাঠে নিয়ে বেদম মারধর ও হাতে-পায়ে গুলি করে ফেলে রেখে যায়। স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার শেষে প্রথমে চৌদ্দগ্রাম উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়ার পর কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে আশংকার জনক অবস্থায় তাকে কুমিল্লা ও পরে ঢাকার একটি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে শনিবার রাত ৯টা থেকে ১টা পর্যন্ত পৌর এলাকার রামরায়গ্রামের দফায় দফায় সংঘর্ষ হয়। এ সময় মাদক ব্যবসায়ী ও চাঁদাবাজ সোহেল অস্ত্র উচিয়ে গুলি বর্ষণ করতে থাকে এবং তার নেতৃত্বে সন্ত্রাসীরা ধারালো অস্ত্র ও লাঠিসোটা নিয়ে রামরায়গ্রামের দোকান-পাঠ বাড়ি ঘর ও খড়ের গাদায় হামলা চালায়। হামলাকালে শতাধিক বাড়িঘর ও দোকানপাট ভাংচুর ও নগদ কয়েক লক্ষ টাকা-লুটপাট করে নিয়ে যায়। এ সময় সন্ত্রাসীরা দোকানের মূল্যবান মালামাল তছনছ করে। এছাড়া সোহেলের সরাসরি গুলিবর্ষণে রামরায়গ্রামের হিরণ কবিরাজের ছেলে সালমানসহ ১০-১২ জন নারী-পুরুষ আহত হয়।
এ ঘটনার জের ধরে পরবর্তীতে গোমারবাড়ি গ্রাম থেকে কিছু উশৃঙ্খল যুবক ধারালো অস্ত্র ও লাঠিসোটা নিয়ে বৈদ্দেরখীল গ্রামে মাদক ব্যবসায়ী ও চাঁদাবাজ সোহেলের বাড়িতে হামলা চালায়। এসময় উশৃঙ্খল জনতা বৈদ্দেরখীল চৌরাস্তায় ৪-৫টি দোকানপাট ভাংচুর করে। রাতে সংবাদ পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
শনিবার দুপুরে সরজমিনে ঘুরে দেখা গেছে, রামরায় গ্রামের নিউ মিতালী স্টোরের মালিক আবুল হাসেম জানান, বিকাশ এজেন্ট পরিচালনার কারনে দোকানের ক্যাশ থেকে নগদ তিন লক্ষ টাকা, তিনটি মোবাইল সেট, বিভিন্ন কোম্পানীর প্রায় এক লক্ষ টাকা মূল্যের সিগারেট নিয়ে যায়। তার দোকানের তালা ভাংতে না পেরে গুলি করে তালা খুলে লুট করে নিয়ে যায়। পাশ^বর্তী তুুহিন স্টোরে হামলা চালিয়ে নগদ ৫০ হাজার টাকা দোকান মালিক সাগরের একটি পাসপোর্ট নিয়ে যায়। এসময় সন্ত্রাসীরা দোকানে সব মালামাল তছনছ করে ফেলে যায়। এতে তার প্রায় দুই লক্ষাধিক টাকার মালামালের ক্ষয়ক্ষতি হয়। রামরায়গ্রামের খলিলুর রহমানের শামীমের ফার্মের ২০/৩০ টি গরুর জন্য রাখা তিনটি খড়ের গাদায় অগ্নি সংযোগ করলে মহুর্তের মধ্যে খড়ের গাদা গুলো পুড়ে ছাই হয়ে যায়। এতে পশুর খাদ্য যোগাড় করতে শামীম এখান দিশে-হারা। সে তার ক্ষতিপূরণ চেয়ে প্রশাসনের নিকট উপযুক্ত বিচারের দাবী জানায়।
চৌদ্দগ্রাম থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা শুভ রঞ্জন চাকমা বলেন, বিষয়টি শুনেছি। কোন অভিযোগ পাইনি। অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।