মোতাহের হোসেন ইমরান :
সোনাগাজীর কাজিরহাট বাজারে বি-বাড়িয়া বেকারী নামক অনুমোদনহীন বেকারীতে অস্বাস্থ্যকর ও নোংরা পরিবেশে তৈরী হচ্ছে বিস্কুট, কেক, পাউরুটি, বনরুটি, পেটিস, বাটারসহ নানা পণ্য। বেকারির তৈরি এসব নিম্নমানের বিভিন্ন দ্রব্য কিনে একদিকে প্রতারিত হচ্ছে গ্রাহক অন্যদিকে হুমকির মুখে পড়েছে জনস্বাস্থ্য। অপরদিকে প্রতিষ্ঠানটি প্রতারণার মাধ্যমে নিচ্ছেন টাকা।
প্রতিষ্ঠানটির বিভিন্ন পণ্য উৎপাদনের পর প্যাকেটজাত করা হলেও প্যাকেটে নেই উৎপাদন, মেয়াদোত্তীর্ণের তারিখ ও মূল্য তালিকা। চলতি বছরের ১৭জানুয়ারি অস্বাস্থ্যকর ও নোংরা পরিবেশে খাদ্য উৎপাদন, পণ্যের মোড়কে মেয়াদ উত্তীর্ণ তারিখ না থাকা, মোড়কের গায়ে মূল্য না থাকা ও নকল মোড়ক থাকার অপরাধে ভ্রাম্যমান আদালত প্রতিষ্ঠানটিকে ১০ হাজার টাকা জরিমানা করেছিল। ভ্রাম্যমান আদালত পরিচালনা করেন, সোনাগাজীর সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট এস এম অনীক চৌধুরী।
গত বুধবার সরেজমিন বি-বাড়িয়া বেকারিতে অনুসন্ধানে গেলে দেখা যায় অস্বাভাবিক চিত্র। অস্বাস্থ্যকর ও অপরিচ্ছন্ন পরিবেশে তৈরি করা হচ্ছে মানহীন খাদ্যদ্রব্য। নোংরা ও সেঁতস্যাতে পরিবেশে নিম্নমানের বেকারী পণ্য তৈরি হচ্ছে। বেকারী শ্রমিকরা খালি গায়ে কাজ করছেন। শরীর থেকে ঘাম বেয়ে পড়ছে খামিরায়, হাত ময়লা। কারো কারো হাতে আবার সিগারেট। কাজ করছে এক হাত দিয়ে। তেলভর্তি ড্রাম খোলাভাবে রাখা। তার উপরে মাছি করছে ভনভন করছে, উড়ে এসে বেকারির ময়লা পড়ছে খামিরায়। কয়েকজন শ্রমিক মাটিতে খাবার রেখে ময়লা হাতে বিভিন্ন খাবার প্যাকেট করছে। দেখা যায় উৎপাদনের পর প্যাকেটজাত করা বিভিন্ন খাদ্য পণ্যের প্যাকেটে নেই কোন উৎপাদন, মেয়াদ উত্তীর্ণের তারিখ ও মূল্য তালিকা। ভ্যানযোগে বিভিন্ন এলাকার হাট বাজার, গ্রামের অলিগলির জেনারেল স্টোর, চায়ের দোকানে এসব পণ্য পৌঁছে দেন ডেলিভারিম্যানরা।
বি-বাড়িয়া বেকারীর মালিক সাইদুল ইসলামের কাছে অনুমোদনের কাগজপত্র দেখতে চাইলে কোন কাগজপত্র দেখাতে পারেননি। কথা বলে জানা গেছে পরিবেশ অধিদপ্তরের ছাড়পত্র, বিএসটিআই কিংবা কোন বৈধ অড়–মোদন নেই তার বেকারীর। বি-বাড়িয়া বেকারির পার্শ্ববর্তী নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক দোকান মালিক জানান, কতিপয় স্থানীয় প্রভাবশালী ব্যক্তিবগকে ম্যানেজ করেই চলছে বেকারীটির ব্যাবসা। বেশিরভাগ খাবারের মান নেই। মেয়াদ উত্তীর্ণের তারিখ না থাকায় ক্ষতি হচ্ছে জনসাধারণের।
কাজিরহাট বাজার বণিক ও মালিক সমিতির সভাপতি ফয়েজ আহমদ নিশু জানান, উৎপাদন ও মেয়াদের তারিখের ব্যপারে আমি কয়েকবার সতর্ক করেছি। গত কয়েকমাস আগে এ অপরাধে ম্যাজিস্ট্রেট জরিমানাও করেছে। এরপরও তারা এরকম কেন করছে এ বিষয়ে মালিকের সাথে কথা বলবো। বগাদানা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. আলাউদ্দিন বাবুল জানান, এর আগেও এই বেকারীতে ম্যাজিস্ট্রেট কয়েকবার অভিযান চালিয়ে জরিমানা আদায় করেছেন। আমি বিষয়টা নিয়ে ইউএনও স্যারকে জানাবো।
উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান সাখাওয়াতুল হক বিটু বলেন, এটাতো অন্যায়। মাকুষের সাথে প্রতারনা। আমি বিষয়টা নিয়ে কাজীরহাট বাজার কমিটিসহ উদ্বর্তন কর্তৃপক্ষের সাথে কথা বলব। সোনাগাজী উপজেলা নির্বাহী অফিসার কামরুল হাসান জানান, পণ্যের প্যাকেটে উৎপাদন, মেয়াদ উত্তীর্ণের তারিখ ও মূল্য তালিকা অবশ্যই থাকতে হবে। আমি দ্রুত সময়ের মধ্যে বি-বাড়িয়া বেকারিতে যাব।