আতিয়ার সজল
ঘটনার সময় ছিল ২৫এপ্রিল দিনগত রাত। দোকানি রহমত উল্যাহ ছিলেন নিজের দোকানে। পাশের দোকাদারারও তাকে দেখেছেন দোকানে। অথচ তাকে করা হলো ১২ কিলোমিটার দূরের একটি মারামারির ঘটনায় মামলার আসামী। মামলার বাদী পক্ষও বললেন, রহমত উল্যাহকে তিনি চেনেন না। অথচ তিনি মামলার আসামী।
ফেনীর সোনাগাজীর বগাদানা ইউনিয়নের তাকিয়া বাজারের হানিফের দোকানের সামনে একটি মারামারির ঘটনায় দায়ের করা একটি মামলায় এমন কান্ড ঘটেছে বলে জানাযায়।
বগাদানা ইউনিয়নের পাইকপাড়া (বৌদ্দ বাড়ি) এলাকার নুরুল ইসলাম গত বুধবার সোনাগাজী থানায় বাদী হয়ে মামলা করেন। তিনি অভিযোগ করেন তার ছেলে নাজিমুল ইসলামকে হত্যার উদ্দেশ্যে সন্ত্রাসীরা হামলা করেছে।
এ ঘটনায় দায়েরকৃত মামলার আসামী করা হয়েছে রহমত উল্যাহকে (৫০)। রহমত উল্যাহ জানান সে দীর্ঘদিন প্রবাসী ছিলেন। গত ৮ মাস আগে দেশে ফিরে এসে ব্যাংক থেকে ২ লাখ টাকা ঋণ নিয়ে বাড়ির সামনে একটি দোকান দিয়ে সোনাগাজী পৌর এলাকায় নিজ বাড়ি চরচান্দিয়াতে ব্যবসা করচেন। উক্ত ঘটনায় মামলার বাদীকে তিনি চেনেনও না। বাদীও তাকে চেনেন না। কেন কি কারণে তিনি আসামী হলেন তা বলতে পারছেন না। একইভাবে আসামী করা হয়েছে ফেনী সরকারী কলেজের অনার্স পড়–য়া শিক্ষার্থী জহিরুল ইসলামকেও। তাকে করা হয়েছে মামলার ১১ নং আসামী।
এ বিষয়ে বিস্তারিত জানতে মামলার বাদী নুরুল ইসলামের ব্যবহৃত ফোনে কল করলে তার ছেলে তুষার ফোন ধরেন। তিনি বলেন, আমরা নিজেরাও রহমত উল্যাহকে চিনিনা। এলাকার অনেকেই অনেকের নাম বলেছে সে আলোকে হয়তো তিনি আসামী হতে পারেন। তবে যদি তিনি ঘটনার সাথে জড়িত না থাকেন তাহলে আমরা চেষ্টা করবো আইনীভাবে তাকে সহায়তা করতে। যদি তিনি ঘটনার সাথে জড়িত না থাকেন তাহলে তাকে মামলা থেকে বাদ দেয়ার জন্য আমরা সহযোগিতা করবো।
এ বিষয়ে কথা হয় রহমত উল্যাহর দোকানের ডান পাশের চা দোকানদার এমদাদের সাথে। তিনি বলেন, ঈদের বাজার হওয়ায় ঘটনার দিন সারাদিন তাকে দোকানদারী করতে আমরাও দেখেছি। একই দোকানের পাশের বাড়ির বাসিন্দা এমদাদ উল্লাহ কাজল বলেন, গত ৮ মাস থেকে দোকান শুরু করার পর দোকান ছাড়া থাকে অন্যকোন কর্মকান্ডে দেখা যায় নি।
অনাকাংখিত ভাবে আসামী হওয়া রহমত উল্যাহ বলেন, জীবিকার একমাত্র মাধ্যম দোকানদারী ছেড়ে গায়বী মামলায় গ্রেফতার এড়াতে এখন তিনি পালিয়ে বেড়াচ্ছেন। তিনি ধারনা করছেন স্থানীয় এক সাবেক কাউন্সিলের ব্যক্তিগত আক্রোশের শিকার হয়ে তিনি মামলার আসামী হয়েছেন। এ ঘটনার সুষ্ট তদন্ত দাবী করে তিনি সুবিচার চেয়েছেন সংশ্লিষ্টদের কাছে।
এ বিষয়ে সোনাগাজী মডেল থানার পরিদর্শক খালেদ হোসেন জানান, বাদী যে এজহার দিয়েছে তা রেকর্ড করা হয়েছে। এ ঘটনায় যদি কেউ জড়িত না থাকে তাহলে তদন্ত করে তাদেরকে বাদ দিয়ে চুড়ান্ত প্রতিবেদন আদালতে দাখিল করা হবে।